বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (The Line of Actual Control, LAC) বরাবর চিনের (China) সাথে নজরদারি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে এবার বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ভারত (India)। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের 30 MQ-9B প্রিডেটর আর্মার্ড ড্রোন কেনার জন্য ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মূলত, মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অ্যাটমিক্সের তৈরি এই ড্রোন কেনার জন্য নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা চলছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ড্রোন দিয়েই সন্ত্রাসবাদী নেতা আল-জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছিল আমেরিকা। এমতাবস্থায়, ভারতের কাছেও এই ড্রোন এলে তা নিঃসন্দেহে ঘুম ওড়াবে শত্রুদেশগুলির। পাশাপাশি, এই অত্যাধুনিক ড্রোনের বৈশিষ্ট্যগুলিও অবাক করবে সবাইকে।
১. মূলত, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নজরদারির জন্য ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দু’টি MQ-9B সি গার্ডিয়ান ড্রোন লিজ হিসেবে পায় ভারত। ওই দু’টি অস্ত্রবিহীন MQ-9B ড্রোনকে এক বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, এই ড্রোনগুলির আয়ু আরও এক বছর বাড়ানোরও বিকল্প ছিল। এমতাবস্থায়, ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনার আবহে, ভারতীয় নৌবাহিনী ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চিনা সামরিক বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সহ চিনের ক্রমবর্ধমান কার্যকলাপের উপর তার নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করছে।
২. জানা গিয়েছে, এই ড্রোনগুলি দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে ভেসে থাকার পাশাপাশি উচ্চ অঞ্চলগুলিকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। পূর্ব লাদাখে চিনের সাথে অচলাবস্থার পর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই ধরনের অস্ত্র সংগ্রহের দিকেই মনোনিবেশ করছে। এছাড়াও, MQ 9B ড্রোনটিকে ন্যাটোর পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা বিশ্বের অসামরিক আকাশসীমার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, ভারতীয় নৌবাহিনী এই ড্রোন কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি, তিনটি সেনাবাহিনীর জন্য এই ড্রোন পাওয়ার আশাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩. জানিয়ে রাখি যে, এগুলি আমেরিকান প্রতিরক্ষা সংস্থা জেনারেল অ্যাটমিক্স দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ড্রোনগুলি প্রায় ৩৫ ঘন্টা বাতাসে উড়তে পারে। সীমান্ত নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং শত্রুর অবস্থান ধ্বংস সহ অনেক কাজে ব্যবহৃত হয় এই অত্যাধুনিক ড্রোনগুলি। সর্বোপরি, এগুলি প্রায় ৪৫০ কেজি বোমা বহন করতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, MQ-9B-র দু’টি প্রকারভেদ রয়েছে। সেগুলি হল স্কাই গার্ডিয়ান এবং সি গার্ডিয়ান। গত এপ্রিলে ওয়াশিংটনে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টু-প্লাস-টু আলোচনার সময়ও এই ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।
৪. এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে এই ড্রোন বিক্রির অনুমোদন দেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নৌবাহিনীর জন্য আমেরিকান কোম্পানি লকহিড মার্টিন থেকে 24 MH-60 রোমিও হেলিকপ্টার কেনার জন্য ভারত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ২.৬ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইতিমধ্যেই সেইসব হেলিকপ্টার সরবরাহ করাও শুরু হয়েছে।
জাওয়াহিরিকে আফগানিস্তানে সেনা না পাঠিয়েই হত্যা করা হয়েছে: উল্লেখযোগ্যভাবে, ইরানি জেনারেল কাসিম সুলেমানি এবং আল কায়েদা প্রধান আল জাওয়াহিরিকে হত্যা করা আমেরিকার MQ-9B প্রিডেটর ড্রোন, শীঘ্রই ভারতে আসতে চলেছে। ড্রোনটি কতটা বিপজ্জনক তা ইতিমধ্যে তার কার্যক্ষমতায় অনুমান করা যায়। জানিয়ে রাখি আফগানিস্তানে সৈন্য না পাঠিয়েই আমেরিকা আল কায়েদার জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছে। উল্লেখ্য যে, জাওয়াহিরি হল সেই ব্যক্তি যে ওসামা বিন লাদেনকে আমেরিকায় ৯/১১ হামলার পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেছিল। এমতাবস্থায়, আমেরিকার কাছ থেকে এই বিশেষ ড্রোন কেনার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা