বাংলাহান্ট ডেস্ক: বয়কট (Boycott) সংষ্কৃতি জাঁকিয়ে বসেছে বিনোদন জগতে। বলিউডে একের পর এক ছবি নাম লেখাচ্ছে বাতিলের খাতায়। সুপারস্টার হোক বা সাধারণ অভিনেতা অভিনেত্রী সবার ছবিই বয়কটের ডাক দিয়েছে নেটিজেনরা। সেই আঁচ এসে লেগেছে টলিউডেও (Tollywood)। নেটপাড়া উত্তাল নামী পরিচালক প্রযোজকদের বিরুদ্ধে। বয়কটের তালিকায় নবতম সংযোজন ‘লক্ষ্মী ছেলে’।
এর আগে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে বয়কটের মুখে পড়েছিল রাজ চক্রবর্তীর ‘ধর্মযুদ্ধ’ এবং ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের ‘বিসমিল্লা’। দুটি ছবির বিরুদ্ধেই বিষ্ফোরক অভিযোগ এনেছে নেটনাগরিকদের একাংশ। এমনকি এমনো কটাক্ষ করা হয়েছিল, ‘বাঙালি এখন আর বন্দে মাতরম বলে না। বলে বিসমিল্লা’।
কিন্তু ‘লক্ষ্মী ছেলে’র অপরাধ কোথায়? তার আগে জেনে নিন ছবির গল্পটা কী? প্রকাশ্যে আসা ট্রেলার থেকে জানা যাচ্ছে সমাজের কুসংষ্কার, অন্ধবিশ্বাস এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালায় আমির, শিবনাথ এবং গায়েত্রী নামে তিন ডাক্তারি পড়ুয়া।
ছবিটি নাকি প্রথমে সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পায়নি। আপত্তি জানিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। শেষমেষ বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করেন গায়ক অভিনেতা রাজনীতিবিদ বাবুল সুপ্রিয়। তিনি নিজে এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তবে সে সময়ে তিনি ছিলেন বিজেপিতে। আর ছবি মুক্তির সময়ে বাবুল তৃণমূলে। তাই তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্য বিবাদ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বয়কট সংষ্কৃতির ভুক্তভোগী পরিচালক রাজ চক্রবর্তী এবং অভিনেতা ঋদ্ধি সেন রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। রাজের অভিযোগ, এইসব একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের আইটি সেল ইচ্ছা করে করাচ্ছে যাতে তারা সব ক্ষেত্রই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ধর্মযুদ্ধ, বিসমিল্লার পর এবার লক্ষ্মী ছেলের সঙ্গে এমন হচ্ছে। আগামী দিনে সব ছবির সঙ্গেই হবে।
ধর্মযুদ্ধ বয়কটের প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ রাজ বলেন, কিছু প্রোফাইল থেকে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তাদের ডিপিতে লাগানো ভারতমাতার ছবি। অথচ এতটাই দুঃসাহস যে বলছে রাজ শুভশ্রীর বিছানায় যুদ্ধ হলে সেটা দেখতে পারি! পরিচালক জানান, তাঁর ছেলে, তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি কেউ ধর্মযুদ্ধের প্রশংসা করলে তাকে শেষ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এদের কোনো জাত, শিক্ষা নেই বলে মত রাজের।
ঋদ্ধি বলেন, ছবিগুলো রাজনৈতিক পোস্ট। জাতীয়তাবাদ বোধের সঙ্গে জোর করে মেশানো হচ্ছে হিন্দু ধর্মকে। কিন্তু ভারত বহু ধর্ম, বহু সংষ্কৃতির দেশ। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে সকলেই এই দেশকে ভালবাসে। সেটা যারা মানতে চান না তারা আসলে কিছু পড়েনইনি বলে মন্তব্য করেন ঋদ্ধি। জোর করে ইতিহাস ভোলানোর চেষ্টা চলছে।