বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে সিবিআই (CBI) এবং ইডির (Enforcement Directorate) তলব আর তার মাঝে এবার দলীয় সিদ্ধান্তে আরো বিপাকে পড়লেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। গত কয়েকদিন ধরেই উধাও থাকার অভিযোগ সামনে আসতেই বর্তমানে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছে সিবিআই আর একই সঙ্গে এদিন মানিকবাবুর কাছ হতে বিধায়ক পদের সকল নিরাপত্তা তুলে নিল রাজ্য। ফলে সব মিলিয়ে আরো যেন বেকায়দায় পড়লেন মানিক ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, নদিয়ার পলাশিপাড়ার বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে নিযুক্ত ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুতে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই কলকাতা হাইকোর্ট দ্বারা তাঁকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে বিধায়ক পদ থাকলেও এবার সেই সংক্রান্ত আর কোনোরকম নিরাপত্তা পাবেন না তিনি! রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেশ উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৭ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম সামনে আসে। এরপরই ২৬৯ জনকে চাকরি দেওয়া প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন ওঠার ফলে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় মানিক ভট্টাচার্যকে। এক্ষেত্রে একাধিকবার তলব করা হলেও কেবলমাত্র একবারই নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান তিনি। গত জুন মাসে পর্ষদের সভাপতি পদ খোয়ালেও বর্তমানে বিধায়ক পদে নিযুক্ত রয়েছেন মানিকবাবু।
উল্লেখ্য, বিগত কিছু সময় ধরে সিবিআই এবং ইডির তলব মাঝেও বারংবার হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতা। একই সঙ্গে গত কয়েকদিনে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার পাশাপাশি যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি মানিকবাবুকে। এর মাঝে আবার গতকাল তদন্তে অসহযোগিতা করার অভিযোগ সামনে এনে তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে সিবিআই। তবে বর্তমানে শুধুমাত্র সিবিআইয়ের চাপই নয়, একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে যথেষ্ট ব্যাকফুটে পর্ষদের প্রাক্তন এই সভাপতি। বর্তমানে বিধায়ক পদে বহাল থাকলেও সেই সকল নিরাপত্তা আর পাবেন না মানিক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার দ্বারা আর পুলিশের নিরাপত্তা পাবেন না তিনি। তবে এ সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর করা হবে, সে প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট ধারণা মেলেনি।
উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে গায়েব থাকার অভিযোগ সামনে আসলেও তা মানতে নারাজ তৃণমূল বিধায়ক। গতকাল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্পষ্ট জানান, “আমি বাড়িতেই রয়েছি। সিবিআইকে সবরকম সহায়তা করছি। আমাকে যেখানে যার দ্বারা যখন ডাকা হয়েছে, আমি সেখানে পৌঁছে গিয়েছি।” তবে সিবিআইয়ের নোটিশ এবং রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ মাঝে মানিক ইস্যু শেষ পর্যন্ত কোন দিকে গড়ায়, সেদিকে তাকিয়ে বঙ্গবাসী।