লাল-হলুদ কোচের প্রিয় সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে স্বপ্নভঙ্গ ইস্টবেঙ্গলের, জয় এটিকে মোহনবাগানের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: শুধুমাত্র একটা ভুল কি করে একটা টিমকে শেষ করে দিতে পারে তা আজকে হাতে-কলমে টের পেল ইস্টবেঙ্গল। এলিয়ান্দ্রো এবং সুমিত পাসির একটা ভুল, আর তাতেই কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেও হারের মুখ দেখতে হল লাল-হলুদ শিবিরকে। লিস্টন কোলাসোর নেওয়া কর্নার থেকে সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে ভর করে জয় পেল এটিকে মোহনবাগান।

ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন নিজের দল সম্পর্কে ভালোই ওয়াকিবহাল। এটিকে মোহনবাগানের মত দীর্ঘদিন একসাথে থাকা এবং একসাথে অনুশীলন করা অনেকদিন আগে থেকে প্রস্তুত হওয়া দলের বিরুদ্ধে যে তার সদ্য প্রস্তুত লাল-হলুদ স্কোয়াড খুব সহজে এঁটে উঠতে পারবে না সেটা তিনি ভালোই জানতেন। তাই দলের আক্রমণভাগে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করতে বেশি ভাবতে হয়নি তাকে।

ডিফেন্সে চুংগুঙ্গার সঙ্গে দুই বিদেশি কিরিয়াকু এবং ইভান গঞ্জালেসকে জুড়ে দিয়েছিলেন কনস্ট্যানটাইন। তাদের সাহায্য করার জন্য পেছনে জেরি এবং প্রীতম সিংকেও দলে রেখেছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ। গোটা ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স একবার মাত্র ভুল করল। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে লিস্টন কোলাসর নির্বিষ কর্নার গার্ড করলেন না ব্রাজিলিয়ান এলিয়ান্দ্রো। সেই বলই সুমিত পাসির গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায় এবং ১-০ ফলে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান।

এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফের্নান্দো বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হাঁটেননি। ফের নিজের সর্ব শক্তিশালী দল মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। লিস্টন কোলাসো, আশিষ রাই, পরিবর্ত হিসেবে নামা মনবীর সিং, হুগো বুমোরা সারাক্ষণ বল নিজেদের কাছেই রেখেছেন এবং বেশিরভাগ সময়ে একাধিক দৃষ্টিনন্দন আক্রমণ তৈরি করেছেন। কিন্তু তাদের বেশিরভাগ আক্রমণই রুখে দিয়েছিলেন চুংগুঙ্গা, ইভান গঞ্জালেজরা। কেবলমাত্র নিজেদের ভুল এই আজকের ম্যাচে হেরে ফিরছে ইমামি ইস্টবেঙ্গল।

দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকটি পরিবর্তন করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা যে করেননি কনস্ট্যানটাইন এমনটা নয়। কিন্তু তার মূলমন্ত্র সেই একই ছিল যে ডিফেন্সে বিপক্ষ ফুটবলারদের জায়গা দেওয়া যাবে না। ফলে আক্রমণভাগে দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামা ক্লিয়েটন সিলভা, অনিকেত যাদবরা পড়ে গেলেন। ফ্লোরেন্টিনো পোগবাদের ডিফেন্স কিছুতেই চেষ্টা করেও ভাঙতে পারলেন না। সিলভা একটি সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু তার নির্বিষ হেড আটকাতে সমস্যা হয়নি সবুজ-মেরুণ গোলরক্ষক বিশাল কাইথের। সুমিত পাসি নিজে আক্রমণেও বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেন। অপরদিকে ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক কমলজিৎ বেশ কয়েকবার রুখে না দাঁড়ালে আরও লজ্জার মুখোমুখি পড়তে হতে পারত ইস্টবেঙ্গলকে। তুহিন দাস দলে না থাকায় ইস্টবেঙ্গলের বাঁ-প্রান্তও কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল।

চলতি ডুরান্ড কাপে নিজেদের প্রথম জয় পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি এটিকে মোহনবাগান শিবির। রাজস্থান ইউনাইটেড এবং মুম্বাই সিটি এফসির সঙ্গে তারাও এখন নকআউট পর্যায়ের দরজায় কড়া নাড়ছেন। ইন্ডিয়ান নেভির বিরুদ্ধে জয় পেলেই এটিকে মোহনবাগানের নক-আউটের টিকিট কার্যত নিশ্চিত হয়ে যাবে।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর