বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় তাঁর রায়দান শোরগোল ফেলে দিয়েছে গোটা বাংলায়। একদিকে যেমন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন তিনি, আবার অপরদিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে তদন্তের দায়ভার তুলে দেন। এ সকল রায়দানের মাধ্যমেই বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gongopadhyay)।
এর মাঝেই এদিন অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে নালিশ জানিয়ে একটি চিঠি প্রদান করেন অরুণাভ ঘোষ সহ আরো অনেক আইনজীবীরা। আর এবার তার বিরুদ্ধে অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। নালিশকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এদিন কারোর নাম না করে অরুণাভ ঘোষ বলেন, “একজন বিচারপতি কয়েকটি মামলায় রায়দানের মাধ্যমে দেখানোর চেষ্টায় রয়েছেন যে, উনি একমাত্র মানুষের পক্ষে আর বাকিরা কেবলমাত্র মানুষের বিপক্ষে।” এক্ষেত্রে কারোর নাম না করলেও তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, তা বলা বাহুল্য। একই সঙ্গে তাঁর বিচার্য বিষয় পরিবর্তন করার জন্য আবেদন জানান তারা। এক্ষেত্রে অরুনাভ ঘোষ সহ আইনজীবীদের দাবি, সাম্প্রতিক সময় কোর্ট রুমে প্রসেডিং ভিডিওগ্রাফি করে চলেছে সংবাদ মাধ্যম। নিয়ম মেনে কোন রকম বিচারের কাজ হচ্ছে না। সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ অবাধ হয়ে গিয়েছে। মূলত এই সকল বিষয়গুলির বিরুদ্ধেই এদিন নালিশ জানান সকলে।
এদিন আইনজীবীদের সকল নালিশের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মামলার শুনানি চলাকালীন তিনি বলেন, “কিছু আইনজীবীরা বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে চিঠি প্রদান করেছে। এতে আমি অবাক। আমি নাকি একটা নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে কাজ করে চলেছি। কিন্তু আমার রায়দানের মাধ্যমে কতজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে, তা কেউ উল্লেখ করেনি। এমনকি আমার বেঞ্চে মামলা তোলার জন্য কাউকে একটাকাও দিতে হয় না, সেই বিষয়ে কেউ কথা বলল না।”
একইসঙ্গে এঅভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নালিশ করা আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমি দুর্নীতিকে সামনে তুলে ধরেছি বলে আমার পিছনে পড়েছ। আদালতে এমন অনেকের রয়েছে, যারা দেরি করে এসে তাড়াতাড়ি উঠে চলে যায়। কিন্তু তাদের নিয়ে কোনো রকম চিঠি লেখা হয় না।”
এরপরেই তিনি অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রসঙ্গকে সামনে এনে মামলা করার হুঁশিয়ারি দেন। উল্লেখ্য, অতীতেও একাধিকবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে অরুণাভ ঘোষের বাদানুবাদ চরমে ওঠে। তবে এদিন তাঁর নামে নালিশ জানিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি প্রদান সেই বিতর্ককে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য পরবর্তী সময়ে অরুনাভ সহ অন্যান্য আইনজীবীদের আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে হাইকোর্টের রায় কি হয়, বর্তমানে সেটাই চর্চার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।