বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কংগ্রেসে (Congress) ভাঙন অব্যাহত। সম্প্রতি গুলাম নবী আজাদ থেকে শুরু করে তেলেঙ্গানার কংগ্রেস নেতা এমএ খান দল ছেড়েছেন। একই সঙ্গে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সকলেই। গত দুদিনে গুলাম নবী আজাদের সমর্থন করে কংগ্রেস ছেড়েছেন শতাধিক নেতা কর্মী। এদিন মোট ৪২ জন নেতা কংগ্রেস দলত্যাগ করেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে এ ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলেছে দেশের প্রধান বিরোধী দলকে।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে সরানোর জন্য তৎপর কংগ্রেস। কয়েকদিন পরেই দলের সভাপতি পদের নির্বাচন আর এই মুহূর্তে একের পর এক প্রবীণ নেতা দলের সঙ্গ ত্যাগ করায় ক্রমাগত চাপে পড়ে চলেছে দল। এসকল ইস্যুকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্যে কংগ্রেসের দিকে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কংগ্রেস দল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গুলাম নবী আজাদ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে দলত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীতে তেলেঙ্গানার নেতা এমএ খানও তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে কংগ্রেস ছাড়েন আর এবার গুলাম নবী আজাদের সঙ্গে শতাধিক নেতাকর্মী কংগ্রেস ছাড়ায় শুরু হয়েছে বিস্তর জল্পনার।
প্রথমে শোনা যায়, সম্ভবত কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন গুলাম নবী। তবে পরবর্তীতে কাশ্মীরের বুকে একটি নতুন দল গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ সামনে উঠে আসে আর এদিন সিএম তারাচাঁদ সহ অন্যান্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীরা কংগ্রেস ছাড়ায় সেই সম্ভাবনাই আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে নতুন দল গঠনে তৎপর হয়ে উঠেছেন নবী আজাদ। আগামী ৪ ঠা সেপ্টেম্বর জম্মুতে একটি সমাবেশ করার কথা রয়েছে তাঁর। আবার দিল্লিতে ওই দিনই অপর একটি সমাবেশে বক্তৃতা দেবেন রাহুল গান্ধী। ফলে সব মিলিয়ে জম্মুর সমাবেশে নয়া পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মুখ খোলেন কিনা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা, সেদিকে তাকিয়ে দেশবাসী।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে কাশ্মীরে নয়া দল গঠন করার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে ৯০ টি আসন থেকে লড়াই করতে চলেছেন গুলাম নবী আজাদ ও তাঁর সমর্থকরা। এক্ষেত্রে এ খবর কংগ্রেসকে যথেষ্ট চাপে রেখেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। একইসঙ্গে নবী আজাদ এবং অন্যান্য একাধিক কংগ্রেস নেতার রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আক্রমণ যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি, দলের সঙ্গ ত্যাগ করে গুলাম নবী বলেন, “কংগ্রেসের সভাপতি থাকাকালীন রাহুল গান্ধীর জন্য দলটি সম্পূর্ণরূপে অবনতির দিকে গিয়েছে। দলের সিনিয়রদের সঙ্গে রাহুলের ব্যবহার ভালো নয়।” পরবর্তীতে তেলেঙ্গানার নেতা এমএ খানও অনেকটা সেই সুরেই বলেন, “দলের সিনিয়রদের সম্মান করতে জানেন না রাহুল গান্ধী। ওর জন্যই কংগ্রেস দলের এই অবস্থা। আগামী দিনে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।”
এর মাঝেই গতকাল আনন্দ শর্মা এবং ভূপিন্দর সিংয়ের মত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নবী আজাদের সাক্ষাৎ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে একের পর এক নেতা যদি কংগ্রেস ছেড়ে দিতে থাকেন, তবে তা আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে দলকে ক্রমশ ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।