বাংলাহান্ট ডেস্ক : মিমি, নুসরত, জুন মালিয়াদের (TMC MLA and MP) নজিরবিহীন আক্রমণ করেছিলেন। আর তার জেরেই কার্যত শাস্তি পেলেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো (Shrikanta Mahata)। কমানো হল তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবার থেকে ২৪ ঘণ্টা মাত্র একজন নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন। তবে মন্ত্রী দাবি করছেন, বিষয়টি নাকি তাঁর জানাই নেই। অবশ্য স্থানীয় তৃণমূল নেতারা সাফাই দিচ্ছেন, মিমি-নুসরতদের করা মন্তব্যের সঙ্গে এই বিষয়টির কোনও যোগই নেই।
বিস্ফোরক মন্তব্য করে শেষ পর্যন্ত ক্ষমাও চেয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। নিজের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকেও ফেলে দিলেন চূড়ান্ত অস্বস্তিতে। এর পরই রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শোকজও করা হয় তাঁকে। সেই শোকজের জবাব দিলেও হল না শেষ রক্ষা। বেঁফাস মন্তব্যের জেরে কার্যত শাস্তিই পেলেন রাজ্যের মন্ত্রী।
কী এমন বলেছিলেন তিনি? সম্প্রতি মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর (Srikanta Mahata MLA) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরতরা লুটেপুটে খাচ্ছে। এরাই যদি দলের সম্পদ হয় তবে আর এই দল করা যাবে না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিদের বোঝাতে চেয়েছিলাম, ওরা কিছুতেই বুঝতে চাননি।’
শ্রীকান্ত মাহাতো আরও বলেন, ‘আমাদের কি বাঁচার অধিকার থাকবে না? আমাদের নাগরিকত্ব কি থাকবে না? এটা আমরা বলতে চাই। আজ থেকে পরিকল্পনা করে জয়যাত্রা শুরু করব। আমরা পুলিশ এবং বিডিওর কাছে স্মারকলিপি জমা দেব। আমাদের নাগরিকত্ব, অধিকার বন্ধ করার ব্যবস্থা যদি করে, তা হলে আমরা কী করব? কী করা উচিত? সে জন্য পশ্চিমাঞ্চল নাগরিক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল কৃষক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল বুদ্ধিজীবী সমাজ আমরা তৈরি করব। আমরা মমতাদি পর্যন্ত যেতে চাই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ, সুব্রত বক্সীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা বুঝতে চাননি। খারাপ লোককেই তাঁরা ভাল লোক বলছেন।’
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। খোদ শাসকদলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রীর মুখ থেকে এই ধরনের বেঁফাস মন্তব্যের জেড়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। যার পরই শোকজ করা হয় তাঁকে। সেই শোকজের উত্তরও দেন শ্রীকান্ত। নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু তারপরও কমিয়ে নেওয়া হল তাঁর নিরাপত্তা।
ইতিমধ্যে এই বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে বঙ্গ বিজেপিও। তাঁদের বক্তব্য, ব্যাপারটি তৃণমূলের ভিতরের হলেও প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো আক্রমণ করেছেন কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে। মেদিনীপুরের বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া, যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী, বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। তাই বিজেপি মনে করছে এটা মারাত্মক অপরাধ। আর এর শাস্তি হিসাবে শুধু নিরাপত্তা কমানোই যথেষ্ট নয়, বরং পদত্যাগ করতে হবে ওই মন্ত্রীকে। যদিও বিজেপির এই দাবির প্রেক্ষিতে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি তৃণমূল নেতৃত্ব।