বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২৫ বছর আগে ঘটেছিল এক খুনের (Murder) ঘটনা। যার ছিল না কোনো প্রত্যক্ষদর্শী কিংবা প্রমাণ। এমনকি, ওই খুনের ঘটনায় সম্ভাব্য অপরাধী হিসেবে একজনকে শনাক্ত করা হলেও রীতিমতো উধাও হয়ে যায় সে। এমতাবস্থায়, একটা সময়ে প্রমাণের অভাবে ঢাকা পড়ে যায় ওই ঘটনার তদন্ত। তবে, এবার দীর্ঘ ২৫ বছর পর সমাধান হল ওই রহস্যের। এমনকি, অভাবনীয়ভাবে খুনিকেও পাকড়াও করতে পেরেছে পুলিশ (Police)। এমতাবস্থায়, বাস্তবের এই রুদ্ধশ্বাস ঘটনা টেক্কা দেবে গোয়েন্দা কাহিনিকেও (Detective Story)।
মূলত, এই ঘটনার জট ছাড়িয়েছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। জানা গিয়েছে, দিল্লির তুঘলকাবাদের বাসিন্দা কিষাণ লাল ১৯৯৭ সালে খুন হয়ে যান। ফেব্রুয়ারি মাসের এক শীতের রাতে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁর মৃতদেহটিকে। এদিকে, সেই সময়ে কিষাণের স্ত্রী সুনীতা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এমতাবস্থায়, প্রাথমিকভাবে এই খুনের ঘটনায় সম্ভাব্য অপরাধী হিসেবে উঠে আসে রামু নামের এক প্রতিবেশীর নাম। যদিও, ওই ঘটনার পর থেকেই উধাও হয়ে যায় সে।
এমতাবস্থায়, একটা সময়ে বন্ধ হয়ে যায় কিষাণের খুনের তদন্ত। এমনকি, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও রীতিমতো আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। যদিও, ২০২১ সালের আগস্ট মাস নাগাদ উত্তর দিল্লির একটি তদন্তকারী দল নতুন করে এই মামলার তদন্ত শুরু করার দায়িত্ব পায়। শুধু তাই নয়, প্রায় এক বছর পর সুনীতাকে ফোন করে তাঁকে দ্রুত লখনউও আসতে বলা হয়। আর সেখানে গিয়েই স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি।
মূলত, সেখানে ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত রামুর দেখা পান তিনি। এমনকি, এতদিন পর স্বামীর খুনিকে দেখতে পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সুনীতা দেবী। জানা গিয়েছে, এই তদন্তের জন্য কালঘাম ছুটে যায় পুলিশের। প্রথমে এলআইসির এজেন্ট সেজে দিল্লিতে রামুর খোঁজ করতে শুরু করে পুলিশ। এমনকি, উত্তমনগরে রামুর আত্মীয়েরও খোঁজ পাওয়া যায়। এমতাবস্থায়, অসুস্থ আত্মীয়ের চিকিৎসায় আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে ফাঁদ পাতে পুলিশ। সেখানেই খোঁজ পাওয়া যায় রামুর ছেলে আকাশের।
তার কাছ থেকে জানা যায় যে, রামু এখন ই-রিকশা চালায়। এমতাবস্থায়, পুলিশকর্মীরাও ই-রিকশা চালক সেজে পাকড়াও করেন রামুকে। তারপরেই জিজ্ঞাসাবাদে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয় সে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে যে, টাকার লোভেই সে খুন করেছিল কিষাণকে। এদিকে, দীর্ঘ ২৫ বছর পর যে আদৌ কিষাণ লালের মৃত্যু রহস্যের সমাধান হবে তা ভাবতে পারেন নি সুনীতা দেবী। ইতিমধ্যেই কিষাণের ছেলের বয়স ২৪ বছর হয়ে গিয়েছে। এমনকি, গত বছর পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করার সময়ে যখন সুনীতার বাড়ি যায় তখন তাঁদের আর ভরসা করতে পারেন নি কিষাণের পরিবারের সদস্যরা। তবে, শেষ পর্যন্ত অপরাধীকে পাকড়াও করতে সক্ষম হল পুলিশ।