বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক ঐতিহাসিক রায়। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এবং ইডিকে তদন্তের দায়ভার দেওয়া থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত; প্রতিটি নির্দেশেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Abhijit Ganguly)। গতকাল একটি সাক্ষাৎকারে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁর দাবি, “কারোর বিরুদ্ধে যদি দুর্নীতি প্রমাণ হয়, তাহলে তার চাকরি যাবে। কেউ যেন নিশ্চিন্তে না থাকেন।”
সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি থেকে প্রাথমিক টেট এবং অন্যান্য একাধিক মামলায় সিবিআই এবং ইডির ওপর তদন্তের দায়ভার তুলে দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। একইসঙ্গে, চাকরি থেকে উপার্জন করা সমস্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেন অভিজিৎবাবু।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে রুষ্ট শাসক দল। তৃণমূল কংগ্রেস নেতামন্ত্রীদের একাধিক সময় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। যদিও এ সকল বিষয় নিয়ে ভাবতে নারাজ তিনি। একইসঙ্গে অভিজিৎবাবুর দাবি, “যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকে, তাহলে তার চাকরি যাবেই। অসৎ উপায়ে চাকরি পেয়ে থাকলে তা কখনোই টিকবে না। যদি কেউ দুর্নীতি করে শিক্ষকের চাকরি পায়, তাহলে ছাত্রদের মধ্যে কোন মূল্যবোধ গড়ে তুলতে পারবে?”
সম্প্রতি কল্যাণ ব্যানার্জী থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা একাধিক সময় বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। সেই প্রসঙ্গে গতকাল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমার এজেন্ডা দুর্নীতি। আমি নির্ভীক। রুপোর চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি। বেকারত্ব কি, তা আমি জানি। যদি আমাকে জুডিশিয়ারি থেকে বহিষ্কার করে, তাও আমি আমার লড়াই চালিয়ে যাব। রাজ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো দুর্নীতি হয়ে চলেছে বলেই সিবিআই দিতে হয়েছে।”
আবার অপরদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করতেও শোনা দিয়েছে তাঁকে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, “অতীতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যখন দেখা হয়েছিল, উনি বলেছিলেন যে আপনি আপনার কাজ করুন। ওনার কথায় কোনরকম ক্রুরতা ছিল না।” যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “বিচার ব্যবস্থা কি করতে পারে, সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। যদি পদক্ষেপ করি, ওনার তিন মাসের জেল হতে পারে।”
উল্লেখ্য, বর্তমানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ফলে একদিকে যেমন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে, আবার অপরদিকে মোট ১৮৭ জন চাকরি প্রার্থীরা শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন। সেই বিষয়টি উল্লেখ করেই তিনি বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি পদক্ষেপ করেছি। তা বদলাবে না। দুর্নীতি আমাদের দেশকে শেষ করে দিয়ে চলেছে। আমি অন্তত এর বিরুদ্ধে কোনরকম আপোস করবো না।”
জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির উপর দিয়ে ভেসে চলছে বিমান, তরুণীর ভিডিও দেখে হতবাক নেটমাধ্যম!