বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘তৃণমূলে যেমন কিছু মানুষ চুরি করেছে, আবার এমন অনেকে রয়েছেন, যারা ভালো কাজ করে চলেছেন’, অন্যান্য তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা মন্ত্রীদের ন্যায় এদিন একই ভাষাতে মন্তব্য প্রকাশ করলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee)। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “দলের অন্দরে দুর্নীতি কোনোভাবেই বরদাস্ত হবে না। যদি কারোর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ধরা পড়ে, তবে কোর্ট থেকে পরিষ্কার হয়ে আসতে হবে।” তৃণমূল মন্ত্রী শোভনদেবের এহেন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
গতকাল খড়দায় শাড়ি এবং মশারি বিতরণী কর্মসূচিতে যোগদান করেন তৃণমূল মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সেখান থেকে তাঁর দাবি, “তৃণমূলে যেমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা চুরি করেছে। আবার এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা ভালো কাজও করছেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন যে, কেউ যদি চুরি করে এবং ধরা পড়ে, তাহলে তাকে কোর্ট থেকে পরিষ্কার হয়ে আসতে হবে। কোর্ট থেকে নিঃশর্তভাবে ছাড়া না পেলে দল থেকে তাকে গ্রহণ করা হবে না।” বিশেষজ্ঞদের মতে, এদিন তৃণমূলের বর্ষীয়ান এই নেতার মন্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা। এ সকল মামলায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বেড়ে চলেছে শাসক দলের। যদিও এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে চলেছে তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা। খড়দার বিলকান্দা লেনিনগড় এলাকায় শাড়ি এবং মশারি বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যতটা সম্ভব সমাজের জন্য কাজ করে যেতে হবে। অভুক্ত মানুষের মুখে খাবার এবং অসুস্থদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ও আনন্দ ধারার মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে মানুষ উপকৃত হয়েছে। মেয়েরা স্বনির্ভর হয়ে অগ্রসর হয়ে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াস আমাদের বাংলাকে গোটা দেশের মধ্যে এক নম্বরে তুলে ধরেছে।”
একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে শোভনদেব বলেন, “অন্য কারোর সমালোচনা করা কখনোই মানায় না, যদি নিজের আচরণ ঠিক না থাকে। আমাদের দলে যখন ছিল, তখন হাতে টাকা পর্যন্ত নিতে দেখা দিয়েছে আর অন্য দলে যেতেই সে সৎ। আমাদের বাড়িতে সিবিআই এবং ইডি এসে চলেছে। অথচ তাদের বাড়িতে কেউ যাচ্ছে না।” একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কেন তাদের বাড়িতে তদন্তকারী অফিসাররা যাচ্ছেন না, সেই বিষয়ে প্রশ্নও তুলে দেন তিনি।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “আমরা ভোটের জন্য রাজনীতি করি না। এখন ভোট না থাকা সত্ত্বেও শাড়ি এবং মশারি তুলে দেওয়া হয়েছে মানুষের হাতে। সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার জন্য আমাদের দল সর্বদা কাজ করে চলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের মত কাজ অন্য কোনো দল করতে পারবে না।”