বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছোটবেলায় গুপ্তধন সংক্রান্ত বিভিন্ন রূপকথার কাহিনি আমরা সকলেই পড়েছি কিংবা শুনেছি। তবে, এবার বাস্তবের মাটিতেও যেন গুপ্তধনেরই সন্ধান পেলেন এক কৃষক। জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের (Israel) গাজা উপত্যকায় এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে যা টেক্কা দেবে রূপকথার গল্পকেও। মূলত, সেখানে এক ফিলিস্তিনি কৃষক জমি খনন করার সময়ে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শনের সন্ধান পান। এমতাবস্থায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, এটি এখনও পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ।
তিন মাস ধরে চলে জমির খনন: এই প্রসঙ্গে মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, একজন ফিলিস্তিনি কৃষক চারা রোপণের জন্য জমির খনন শুরু করেছিলেন। ঠিক সেই সময়েই তিনি মাটিতে একটি বাক্সের মতো কিছু দেখতে পান। তারপর ওই কৃষক তাঁর ছেলের সাথে টানা তিন মাস খননকাজ চালিয়ে যান। সেই খননের পরে তাঁরা একটি অমূল্য ঐতিহাসিক নিদর্শন খুঁজে পান। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওই এলাকায় এটিই এখনও পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তরিত করা হয়েছে: প্রতিবেদন মারফত জানা গিয়েছে যে ওই কৃষক বাইজেন্টাইন যুগের একটি অলঙ্কৃত মোজাইকের মেঝে খুঁজে পেয়েছেন। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই তিনি তা প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের কাছে হস্তান্তরিত করেছেন। সর্বোপরি, এতদিন যাবৎ ওই ঐতিহ্যশালী সম্পদ রক্ষার জন্য তাঁকে পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনার স্তরে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, যে অঞ্চলে এই মোজাইকটি পাওয়া গেছে তা সর্বদা ইজরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের আবহের মধ্যে থাকে। এমতাবস্থায়, এই প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন সকলে।
পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ের মোজাইক: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গাজার যে এলাকায় এই মোজাইকের মেঝে পাওয়া গেছে সেটি ইজরায়েল সীমান্ত থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তবে, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই মোজাইকটি এখনও খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি, এই মোজাইক সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোজাইকের মেঝেটি পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ের।
এদিকে প্রাচীনকালে, গাজা ছিল মিশর এবং লেভান্টের মধ্যেকার বাণিজ্যের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পথ। জানা গিয়েছে, যে কৃষকের জমিতে এই মোজাইকের মেঝেটি পাওয়া গেছে তিনি সেই অমূল্য সম্পদটি টিনের চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে ওই কৃষক জানান, তিনি এই অনন্য আবিষ্কার রক্ষার কারণে সরকারের কাছ থেকে পুরস্কার আশা করছেন।