বাংলাহান্ট ডেস্ক: মানুষ চলে যায়, কিন্তু তাদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিরা থেকে যায়। কাছের মানুষরা সেই স্মৃতি আঁকড়েই দিন যাপন করেন। দু বছর হয়ে গেল প্রয়াত হয়েছেন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল (Tapas Paul)। দীর্ঘ রোগভোগের পর ২০২০ র ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবথেকে সফল এবং জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। নিজের অভিনয়ের জন্য যতটা ভালবাসা পেয়েছিলেন দর্শকদের, তাঁর বেফাঁস মন্তব্য নিয়েও তেমনি বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু তাপস পালের মৃত্যুর পর তাঁর কাছের মানুষ, তাঁর ইন্ডাস্ট্রির সতীর্থরা অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তাপস পালের পরিণতির জন্য দোষারোপ করেছিলেন রাজনৈতিক জগৎকেই।
আজ ২৯ সেপ্টেম্বর তাপস পালের জন্মবার্ষিকী। এদিন হাজারো স্মৃতি মনের মধ্যে ঘুরেফিরে আসছে অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর (Chiranjit Chakraborty)। প্রসেনজিৎ, তাপস, অভিষেক এবং চিরঞ্জিৎ এই চারমূর্তি ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম শক্ত খুঁটি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চার বন্ধুর মধ্যে দুজন আর নেই। প্রয়াত প্রিয় বন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে পুরনো স্মৃতিগুলিই মনে ভেসে উঠছে চিরঞ্জিতের।
তাপস পাল এবং প্রসেনজিতের সঙ্গে বন্ধুত্বটা যে খুব গভীর ছিল সেটা স্বীকার করে এক সংবাদ মাধ্যমকে চিরঞ্জিৎ জানান, তাঁদের তিনজন একসঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। সেটা এখনো তাঁর খুব প্রিয়। তবে তাপস পাল ছিলেন তাঁদের তিন জনের মধ্যে সবথেকে সফল, সুপারস্টার। একথা বলতে দ্বিধাবোধ করেননি চিরঞ্জিৎ।
দাদার কীর্তি, গুরুদক্ষিণা, ভালোবাসা ভালোবাসা সুপারহিট ছবি কম নেই তাপস পালের কেরিয়ারে। কিন্তু নিজের দোষেই তিনি নিজের জায়গাটা হারিয়েছিলেন বলে মনে করেন চিরঞ্জিৎ। তাঁর মতে, কিছু সিদ্ধান্ত ভুল নিয়েছিলেন তাপস পাল। আবার নিয়তিরও একটা ব্যাপার আছে। এমন কথা বলে বসেছিলেন তাপস যার জন্য তাঁর কেরিয়ার, ভাবমূর্তি, জনপ্রিয়তা সবটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
ওই বিতর্কিত কথাটা বলে যে খুব বড় ভুল করেছিলেন সেটা তাপস পাল নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন বলে জানান চিরঞ্জিৎ। কিন্তু যে ভুলটা একবার চিহ্নিত হয়ে গেল, হাজারবার ক্ষমা চেয়েও সেই কলঙ্ক মুছল না তাঁর। চিরঞ্জিতের মতে, তাপস পাল ছিলেন সুপারস্টার, উপরন্তু তৃণমূলের একজন তারকা রাজনীতিক। ওই ভুলটা কেউ ক্ষমা করেনি।
তাপস পালের সঙ্গে নানান ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে মুহূর্তগুলোর স্মৃতিও শেয়ার করেছেন চিরঞ্জিৎ। খুব খেতে ভালবাসতেন তাপস পাল। একবার একটি ছবির শুটিংয়ে প্রথমে কিছু খাব না বলেও পরে দেবশ্রী রায়ের খাবারের পাশাপাশি আবার বিরিয়ানিও আনিয়ে খেয়েছিলেন তিনি। সহজ সরল মানুষ ছিলেন। একটা বেফাঁস মন্তব্য চিরদিনের জন্য তাপস পালের হাসিটা মুছে দিল। এটাই দুর্ভাগ্যের, আফশোস করেন চিরঞ্জিৎ।