বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও হতাশায় আত্মঘাতী চাকরিপ্রার্থী। প্রাথমিক স্কুলে চাকরির (Primary Teacher) জন্য ছয় লক্ষ টাকা দেন। কিন্তু চাকরির দেখা নেই। হতাশায় নিজের জীবনই শেষ করে দিলেন যুবক। মৃত যুবকের নাম আব্দুর রহমান শেখ। তাঁর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিস। তাতে তিনি প্রতারণার কথা লিখেছেন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) লালগোলা (Lalgola) এলাকায়। আব্দুরের বাবা মুফিজুদ্দিন শেখ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, প্রাথমিকে চাকরি পাওয়ার জন্য ছয় লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও চাকরি পাননি তিনি। এমন কি চাকরির জন্য যে সব নথি তিনি দেন সেগুলোও আর ফেরত দেওয়া হয়নি। প্রতারিত হয়ে মঙ্গলবার বাড়ির কাছে চাষের জমিতে আত্মঘাতী হন ওই যুবক।
লালগোলার পাইকপাড়া অঞ্চলের সারপাখিয়া গ্রামে ওই যুবকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট । সেই সুইসাইড নোট থেকে জানা যায়, প্রথমে এসএসসি গ্রুপ ডি-র জন্য পরীক্ষা দেন তিনি। পরিচিত রেহেশান শেখের মাধ্যমে দিবাকর কনুই নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। কান্দির বাসিন্দা হলেও কলকাতায় থাকতেন দিবাকর। সেই দিবাকরই তাঁকে গ্রুপ ডি-র চাকরির বদলে প্রাইমারি স্কুলে চাকরির লোভ দেখান। বেশ কয়েক দফায় তার কাছ থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা আদায় করেন। এতো টাকা দেওয়ার পরেও চাকরি হয়নি আব্দুর রহমানের। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে তিনি জানান সুইসাইড নোটে।
মঙ্গলবার সকালে তিনি আত্মঘাতী হন। জানতে পেরে তড়িঘড়ি আব্দুরের দেহ উদ্ধার করে আনে পরিবারের লোকজন। কোনও ময়না তদন্ত ছাড়াই ওই দিনই দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হয়। পরে ঘটনাটি অবশ্য প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটনায় রেহেসান শেখকে গ্রেফতার করে পুলিস।
আত্মঘাতী হওয়ার খবর জানতে পেরে আব্দুরের বাড়িতে যান ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। কিন্তু তাঁর বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি। তখন লালগোলা থানায় গিয়ে ওসি সঙ্গে দেখা করেন।
এই ঘটনায় বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘বংলা জুড়ে নৈরাজ্য চলছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিন ঠাকুর উদ্বোধন করছেন। আর অন্য দিকে কুকীর্তির উন্মোচন হচ্ছে।’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। এর পিছনে বড় কোনও চক্র জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।