বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় অভিনব কৌশল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI)। সম্প্রতি, তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) নামে চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী অফিসাররা। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে তৃণমূল দলের সাংসদ শতাব্দী রায়ের (Satabdi Roy) নাম দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। বিগত বেশ কিছু সময় ধরে হেফাজতেই রয়েছেন বীরভূমের এই তৃণমূল নেতা। একই সঙ্গে এই মামলার দরুণ ইতিমধ্যে একাধিক চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এসে চলেছে। বিগত বেশ কয়েকদিনে অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও আত্মীয়দের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। শুধু তাই নয়, তৃণমূল নেতার মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার জমি এবং কোম্পানির সন্ধান মিলেছে।
এই সকল ইস্যুকে সামনে রেখেই সম্প্রতি আদালতে ৩৫ পাতার একটি চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, এই চার্জশিটে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দীর রায়ের নাম রয়েছে। এছাড়াও ব্যাঙ্ক ম্যানেজার থেকে শুরু করে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এবং কর্মীদের নাম রাখা হয়েছে উক্ত চার্জশিটে।
গরু পাচার মামলায় সম্প্রতি শতাব্দী রায়কে নোটিশ পাঠানো হয় এবং পরবর্তীতে তাঁর বয়ান পর্যন্ত রেকর্ড করে সিবিআই। এই সকল বিষয় উঠে এসেছে চার্জশিটে। একই সঙ্গে মোট ৯৫ জনের নাম সাক্ষী হিসেবে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে শতাব্দী রায়ের নাম রয়েছে ৪৬-এ। যদিও এই প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত তৃণমূল নেত্রীর কোনরকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, অতীতে একাধিক সময় অনুব্রত মণ্ডল এবং শতাব্দী রায়ের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। এক্ষেত্রে গত বিধানসভা নির্বাচনে অনুব্রতর জন্য শতাব্দী রায় দল ছাড়তে চলেছেন বলে একটা সম্ভাবনা সামনে আসতে থাকে। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে এই সকল জল্পনা উড়িয়ে তৃণমূল নেতার গ্রেফতারী প্রসঙ্গে তাঁর পাশেই দাঁড়ান শতাব্দী। তিনি বলেন “আমরা যে অকৃতজ্ঞ নই, তা বোঝানোর সময় এসেছে। তাই অনুব্রত মণ্ডলের পাশে আমাদের সকলকে থাকতে হবে। আপনারা অনুব্রত মণ্ডলের থেকে যখন সহযোগিতা পেয়েছেন, ওনাকে সঙ্গে পেয়েছেন, তখন ওনার পাশেও আপনাদের থাকতে হবে।”
যদিও এ সকল বিষয়কে ছাপিয়ে চার্জশিটে তৃণমূল সাংসদের নাম কি কারণে দেওয়া হলো, তা নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে এক্ষেত্রে নাম রয়েছে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মীদেরও। সম্প্রতি অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে ১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট পাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সকল ইস্যুতে তৃণমূল নেতাকে চাপে ফেলতেই সকলের নাম সাক্ষী হিসেবে দেওয়া হয়েছে।