বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গ রাজনীতিতে একের পর এক ইস্যুতে তৃণমূল (Trinamool Congress) বনাম শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) দ্বন্দ্ব অব্যাহত। নন্দীগ্রাম (Nandigram) আন্দোলনে ভূমিকা প্রসঙ্গে সেই বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি, এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কটাক্ষ ছুড়ে দেন বিরোধী দলনেতা। তবে এর ঠিক পর মুহূর্তেই আবার শুভেন্দুকে আক্রমণ করে বসেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) আর এবার শোভনকে পাল্টা ‘ভাঁড়’ বলে খোঁচা মারলেন শুভেন্দুবাবু।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে নিজের পুরানো দল ছেড়ে পদ্মফুল শিবিরে নাম লেখান শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে পরবর্তীতে বিজেপি ছেড়ে পুনরায় একবার তৃণমূলের ফেরার লক্ষ্যে তৎপর হয়ে উঠেছেন শোভন এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও শোভন-বৈশাখীর বিপরীত স্রোতে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে একাধিক সময় বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে।
সম্প্রতি সেই ধারা বজায় রেখে নন্দীগ্রাম আন্দোলন প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ ছুড়ে দেন শুভেন্দু। পরবর্তীতে বিজেপি নেতার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে একটি ভিডিও বার্তায় শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যেদিন নন্দীগ্রামের ঘটনা ঘটেছিল, সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমি ছিলাম। ফলে শুভেন্দু আর শিশিরের বাসভবনে মমতার থাকার যে দাবি তোলা হচ্ছে, তা মিথ্যে।”
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “একদল ছেড়ে অন্য দলে গিয়ে বর্তমানে বিরোধী দলনেতা সত্য ঘটনাকে বিকৃত করেছেন। নীতি-নৈতিকতা বলে কিছু নেই। নন্দীগ্রামে যেদিন ঘটনা ঘটেছিল, তখন আমি ছিলাম। তাই মিথ্যা কখনো সহ্য করব না। সিঙ্গুরে তাপসী মালিক থেকে নন্দীগ্রামে ভরত মণ্ডল খুন, সবকিছু নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করেছি। তাই যদি সেই ঘটনাকে কেউ বিকৃত করে, তার প্রতিবাদ করব।”
সেই প্রসঙ্গে এদিন শোভনকে পাল্টা ‘ভাঁড়’ বলে বসলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “ওই ভাঁড়েদের কথায় উত্তর দেব না। ২০০৮ সালের ১৩ ই মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শান্তিকুঞ্জ বাড়ির চার তলায় রাত কাটান। পরবর্তীতে সেখান থেকে অধিকারী পল্লীতে (যেখানে গুলি চালানো হয়) গিয়ে মাটি সংগ্রহ করে আবার কলকাতার মিছিলে যোগ দেন। এসব কিছু তিনি করেছিলেন ভোটের আগে বাজার গরম করার জন্য।”
উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করার মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। তবে অপরদিকে দমতে নারাজ শুভেন্দুও। ফলে সব মিলিয়ে শুভেন্দু বনাম শোভন দ্বন্দ্বে পরবর্তী সময় বঙ্গ রাজনীতি নয়া বিতর্কের সাক্ষী থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।