বাংলাহান্ট ডেস্ক: বলিউডে ‘খানদান’ কম নেই। কিন্তু নবাব পরিবার একজনেরই। আর সেটা হল সইফ আলি খানের (Saif Ali Khan)। বলিউই তাঁর কাজকর্মের স্থল হলেও তাঁর ব্যাকগ্রাউন্ডটা অস্বীকার করার নয়। পতৌদির নবাব সইফ। বংশানুক্রমে এই উপাধি পেয়ে আসছেন তাঁরা। অভিনেতার বাবা মনসুর আলি খান পতৌদির মৃত্যুর পর পরিবারের দশম নবাব হলেন সইফ।
২০১১ সালে প্রয়াত হন মনসুর। প্রতিভায় তিনি ছিলেন ছেলের থেকে অনেক এগিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকা সদস্য ছিলেন তিনি। অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরকে বিয়ের পর তাঁদের প্রথম সন্তান সইফ। কিন্তু বাবার পথে না গিয়ে তিনি অভিনয়ই বেছে নেন কেরিয়ার হিসাবে।
বাবার মৃত্যুর পরেই ‘পাগড়ি’ অনুষ্ঠান করে সইফকে নবাবের উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এ প্রথা বহু বছর ধরে চলে আসছে পতৌদি পরিবারে। স্থানীয় মানুষদের মন রাখতে অনুষ্ঠান করতে রাজি হয়েছিলেন সইফ। কিন্তু নিজেকে কখনোই নবাব বলে মন থেকে মানতে পারেননি অভিনেতা।
যদিও সময় সুযোগ পেলেই পতৌদি প্যালেসে গিয়ে সপরিবারে সময় কাটিয়ে আসেন সইফ। অবশ্য অভিনেতার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী করিনা কাপুর খান এবং সন্তান তৈমু্র ও জাহাঙ্গীরদেরই যেতে দেখা যায় সেখানে। সইফের প্রথম পক্ষের সন্তান সারা আলি খান এবং ইব্রাহিম আলি খানদের তেমন যেতে দেখা যায় না পতৌদি প্যালেসে। কিন্তু সইফের সম্পত্তি দু পক্ষের সন্তানদের মধ্যে কারা পাবে?
হরিয়ানাতে পতৌদি প্যালেস এবং ভোপালে আরো কিছু সম্পত্তি মিলিয়ে সইফের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০০ কোটি টাকারও বেশি! কিন্তু এত টাকার মালিক হয়েও নিজের চার ছেলে মেয়েকে এক কানাকড়িও দিতে পারবেন না অভিনেতা। উত্তরাধিকার সূত্রে যদি পতৌদি প্যালেস চার সন্তানের মধ্যে কেউ পেতে চায় তাহলে তাঁকে আইনি পথে যেতে হবে।
আসলে পতৌদি পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত সম্পত্তি ভারত সরকারের বিতর্কিত শত্রু বিরোধ আইনের আওতায় পড়ে। এই আইনের আওতায় যেসব সম্পত্তি রয়েছে তার উত্তরাধিকারী হিসাবে কেউ নিজেকে দাবি করতে পারেন না। আর যদি কেউ দাবি করেও তাহলেও সোজা পথে সম্পত্তির অধিকার তিনি পাবেন না। প্রথমে তাকে যেতে হবে হাইকোর্ট। সেখানে না হলে সুপ্রিম কোর্ট। আর যদি সেখানেও না হয় তাহলে সোজা রাষ্ট্রপতির দরবারে।
যেটা জানা যাচ্ছে, এই পতৌদি পরিবারের সম্পত্তি আসলে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে থাকা নবাব হামিদুল্লাহ খানের। তিনি হলেন সইফের ঠাকুরদার বাবা। কিন্তু নবাব নিজের সম্পত্তির কোনো উইল করে যাননি। যার জেরে পরবর্তীকালে শরিকদের মধ্যে কিছু ঝামেলা বিবাদ হয়। শোনা যায়, পাকিস্তানে বসবাসকারী সইফের এক ঠাকুমার সঙ্গে এই পরিবারের কিছু মনোমালিন্য রয়েছে।
অপর একটি সূত্রের কথা মানলে, নবাব হামিদুল্লাহ তাঁর যাবতীয় সম্পত্তির মালিকানা বড় মেয়ে আবিদার নামে করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আবিদা বিয়ে করে পাক মুলুকে চলে গেলে সম্পত্তির অধিকার পান মেজ মেয়ে সাজিদা। সাজিদা বিয়ে করেন ইফতিখার আলি খাঁকে। তাঁদের তিন ছেলে মেয়ে, মনসুর আলি খান, সালেহা সুলতান ও সাবেহা সুলতান। সম্পত্তির উত্তরাধিকারি হয়েছিলেন মনসুর যিনি কিনা সইফের বাবা।
সেই সূত্রে সইফ পতৌদির সম্পত্তির অধিকারী হলেও ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার হামিদুল্লাহের মেজ মেয়ে সাজিদা নয়, পাকিস্তানে চলে যাওয়া বড় মেয়ে আবিদাকেই সম্পত্তির আসল অধিকারিণী ঘোষনা করে। সুতরাং আইন অনুযায়ী পতৌদি সম্পত্তির মালিকানা আর ভারতে নেই। তাই সইফ বা তাঁর সন্তানরাও আইনি পথ ছাড়া এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করতে পারবে না।