‘কেষ্ট’র বাড়ির পরিচারক থেকে কাউন্সিলর, সেই বিশ্বজ্যোতির ব্যাঙ্কে হত কোটি টাকার লেনদেন!

বাংলাহান্ট ডেস্ক: গরু পাচার মামলার (Cattle Smuggling Case) তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে। কেঁচো খুঁড়তে কেউটেও বেরিয়ে পড়ছে। আর ততই জোরালো হচ্ছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা। গরু পাচার কাণ্ডে একাধিকবার অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন করেছিল সিবিআই। কিন্তু প্রতিবারই নানা রকম কারণ দেখিয়ে তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা। কিন্তু অবশেষে ১১ অগাস্ট নিজের বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। 

এরপরেই তাঁকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলের সংশোধনাগারে। গরু পাচার মামলার তদন্তে উঠে আসে একাধিক নাম। অনুব্রতের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও গ্রেফতার করা হয়। গত ৭ অক্টোবর আদালতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। সেখান থেকে উঠে এসেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির প্রাক্তন পরিচারক বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেও কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। 

কে এই বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ২০১১ সালে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পরিচারক হিসেবে কাজে যোগ দেন তিনি। সেই বিশ্বজ্যোতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে প্রায় ৪৬ লক্ষ নগদ টাকা। একজন পাঁচ হাজার টাকা মাইনের পরিচারকের অ্যাকাউন্টে কীভাবে এত টাকা জমা পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই অ্যাকাউন্টে যা লেনদেন হয়েছে, সবই অনুব্রত অথবা তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের নির্দেশে। 

বিশ্বজ্যোতি বর্তমানে বোলপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাদের চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে, এখন বেতন হিসেবে অনুব্রতের পরিবারের থেকে মাসে ২০ হাজার টাকা পান বিশ্বজ্যোতি ওরফে মুন। এ ছাড়া তাঁর আয়ের অন্য কোনও উৎসের প্রমাণ মেলেনি। তবুও তদন্তে উঠে এসেছে, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বোলপুর শাখায় বিশ্বজ্যোতির নামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে ৫১ বারে মোট ৪৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬০৪ টাকা নগদ জমা করা হয়েছে। পাশাপাশি, ৮ বার অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারের মাধ্যমে জমা করা হয় ৬২ লক্ষ ৭৭ হাজার ৩৪৫ টাকা।

কেন্দ্রীয় তদনকারী সংস্থা আরও দাবি করেছে, বিশ্বজ্যোতিই তাদের জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি আসলে তাঁর নামে থাকলেও সেটির নিয়ন্ত্রণ ছিল অনুব্রত ও সায়গলের হাতে। কেষ্টর নির্দেশেই তিনি ভাউচার ও চেকে সই করতেন। সায়গলও মাঝে মধ্যে টাকা তোলার স্লিপে সই করার নির্দেশ দিতেন।    

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর