বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর সমাপ্তি ঘটেছে। বর্তমানে প্রতিটি বাঙালি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছে কালীপুজোর (Kalipuja) জন্য। ইতিমধ্যে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে প্রতিবছর বোলপুরের (Bolpur) কালীপুজোয় মানুষের নজর থাকলেও এবছর মূলত সাদামাটা ভাবেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) কালী উৎসব। গত বছর মা কালীকে ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায় সজ্জিত করেছিলেন তৃণমূল নেতা। অবশ্য এ বছর কেবলমাত্র দু চারটে গয়না দিয়েই সাজতে চলেছেন মা।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। এরপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসে চলেছে। অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। এর মাঝে এই মুহূর্তে বড় খবর, এ বছর ভরি ভরি সোনার গয়নায় সাজানো হবে না মা কালীকে। এক্ষেত্রে মাথার মুকুট, কানের দুল, গলার হার এবং পায়ের নূপুর দিয়ে সাজানো হতে চলেছে শ্যামা মাকে। পাশাপাশি অনুব্রতর স্থানে মাকে গয়না পরিয়ে সাজাতে চলেছেন পুরোহিত রেবতী রঞ্জন ব্যানার্জি।
এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি মলয় মুখার্জি বলেন, “প্রতি বছরের মত এ বছর কালীপুজোর আয়োজন করা হবে। সাধারণ মানুষদের ভোগ খাওয়ানো হতে চলেছে। তবে প্রতিবছরের মত অলংকারে সাজানো হবে না মাকে।” সূত্রের খবর, এ বছর এলাকায় চাঁদার দিক থেকেও কাটছাঁট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মোট ১৫০ জনের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা সংগ্রহ করা হতে চলেছে, যার মাধ্যমে আয়োজন করা হবে শ্যামা পুজোর।
অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোর খরচ
অনুব্রত মণ্ডল দ্বারা আয়োজিত কালীপুজোর ক্ষেত্রে যেদিকে মানুষের সর্বপ্রথম নজর যায়, তা হল মা কালীর গায়ের ‘অলংকার’। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক গয়নায় মাকে ঢেকে দেন তৃণমূল নেতা। নিজের হাতে মাকে গয়না দিয়ে পরিসজ্জিত করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে নজর থাকে তাঁর। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে মা ও স্ত্রী মারা যাওয়ায় নিজের হাতে সাজাতে পারেননি মাকে। তবে তা সত্ত্বেও ২০২০-এ কালী প্রতিমাকে ৩৬০ থেকে ৩৭০ ভরি অলংকারে ভরিয়ে দেন অনুব্রত। এর ঠিক পরের বছরে সেই পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় দ্বিগুনে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মা কালীর অলংকারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫৬০ থেকে ৫৭০ ভরি, যার মূল্য বর্তমানে তিন কোটি টাকারও বেশি। তবে এবছর সেই পথে হাঁটলো না জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, গত বছরের ৫৭০ ভরি গয়নার কি হলো? যদিও বর্তমানে সিবিআই তদন্ত মাঝে মুখ খুলতে চাননি কেউই।
একই সঙ্গে বর্তমানে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পর থেকে যেভাবে অস্বস্তি বেড়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের, সেই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে এ বছর কালীপুজোয় অবশেষে সাধারণ মানুষের যোগদান কিরকম থাকে, সেটাই দেখার।