বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ডঃ এপিজে আব্দুল কালাম (A. P. J. Abdul Kalam) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। যদিও, এই বিষয়টি অনেকের কাছেই অজানা। শুধু তাই নয়, ডঃ কালাম, নরেন্দ্র মোদীকে “বিশেষ বন্ধু” হিসেবেও অভিহিত করতেন। এছাড়াও, তাঁদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগও ছিল। এদিকে, গত ১৫ অক্টোবর ছিল কালামের জন্মদিন। এমতাবস্থায়, আব্দুল কালামের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর নাতি এপি জেএমজে শেখ সেলিম এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করেছেন।
বাড়িতে এসে দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী: শেখ সেলিম জানিয়েছেন, “একদিন ডক্টর কালাম আমাকে বললেন, গুজরাট থেকে আমার খুব ভালো বন্ধু আসছে। আমি ভেবেছিলাম তাঁর কিছু বন্ধু হয়ত বেড়াতে আসছে। এর পরেই বাড়ির বাইরে অনেক গাড়ি চলে আসে। দেখলাম গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। যদিও, বাড়ির বাইরে সব যানবাহন দাঁড় করিয়ে পায়ে হেঁটে ঘরের ভিতরে আসেন মোদী। এটা আমার জন্য একটি বড় মুহূর্ত ছিল। ঘটনাটি ২০০৯ সালের। আমি তখন দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম।”
ডঃ কালামকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মোদী: এদিকে, ডঃ কালামকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, একজন বিজ্ঞানী এবং রাষ্ট্রপতি হিসাবে কালাম দেশের জন্য যে অবদান রেখেছেন তা প্রশংসনীয়। তিনি সমাজের প্রতিটি স্তরের সাথে সামঞ্জস্য রেখেছিলেন। পাশাপাশি, কালামকে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি অনেক বইও লিখেছেন, যেগুলি তরুণদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এপিজে আব্দুল কালাম ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে আসীন ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর অনাড়ম্বর জীবনযাপন এবং সরল আচরণের জন্য সকলের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। সর্বোপরি, কালাম সাধারণ জনগণের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনের দরজাও খুলে দেন। এছাড়াও, তাঁর অনবদ্য সব কর্মকান্ডের জন্য তাঁকে “জনগণের রাষ্ট্রপতি” হিসেবে অভিহিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর করেছিলেন ফোন: এই প্রসঙ্গে শেখ সেলিম জানান, ডঃ কালাম প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ ছিলেন। পাশাপাশি, মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তিনি কালামকে ফোন করে আশীর্বাদ চান। কালাম তখন তাঁকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে উন্নয়নমূলক কাজ করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও, তিনি ২০২০ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন।
শেখ সেলিম আরও জানান, এপিজে আব্দুল কালাম ২০১৫ সালে প্রয়াত হন। এমতাবস্থায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে দিল্লিতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্নের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও কালামের বড় দাদা তাঁর পার্থিব দেহকে রামেশ্বরমে নিয়ে আসার জন্য আবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে সেই আবেদন মেনে নেন। তারপরেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের তরফে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন নরেন্দ্র মোদী।
স্মৃতিসৌধ নির্মাণের তদারকি করেন নরেন্দ্র মোদী: এমতাবস্থায়, নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে শেখ সেলিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মাত্র ন’মাসের মধ্যেই কালামের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী ২০১৭-র ২৭ জুলাই ওই স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করতে চেয়েছিলেন। ওই স্মৃতিসৌধটি ডিআরডিও তৈরি করেছিল। প্রতি মাসে প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেন এবং তিনি প্রতিশ্রুতি পূরণও করেছেন। তিনি রামেশ্বরমে এসে এপিজে আব্দুল কালাম ন্যাশনাল মেমোরিয়ালের উদ্বোধন করেন।”