বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: গত মরশুমে অবিশ্বাস্য ও নিয়মিতভাবে বড় ম্যাচগুলোতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করার ফল পেলেন ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা। সোমবার নিজের প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতার পর মুহূর্তটিকে শৈশবের স্বপ্ন পূরণ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়কের হাতে গতকাল রাতে প্যারিসের ‘থিয়েটার ডু চ্যাটেলেটে’ বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের স্মারক তুলে দিয়েছে ফ্রেঞ্চ ফুটবল এবং এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পৃথিবীর কারোর মনেই কোনওরকম দ্বিধা ছিল না।
গত মরশুম কার্লো আনচেলত্তির কোচিংয়ে রিয়াল মাদ্রিদ লা লিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল এবং সেই সময় করিম বেনজেমা ৪৬টি ম্যাচ খেলে ৪৪টি গোল করেছিলেন। ম্যানচেস্টার সিটি, সেভিয়া, চেলসি, লিভারপুল, পিএসজির মতো বড় দলগুলির বিরুদ্ধে তার পারফরম্যান্স ছিল অভাবনীয়। ফ্রান্সের এই ৩৫ বছর বয়স্ক তারকা স্ট্রাইকার ১৯৫৬ সালে স্ট্যানলি ম্যাথিউসের পর থেকে সবচেয়ে বয়স্ক ফুটবলার হিসাবে ব্যালন ডি’অর জয়ের নজির গড়েছেন।
বেনজেমার হাতে এই খেতাব তুলে দেন তার প্রাক্তন কোচ এবং গত প্রজন্মের শেষ্ঠ মিডফিল্ডার জিনেদিন জিদান। কয়েক বছর আগে যখন জিদান রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান কোচ ছিলেন, তখন ক্রমাগত খারাপ পারফরম্যান্সের জেরে সকলেই যখন বেনজেমার ওপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলেছিলেন তখন জিদান তার কাঁধে নিজের বিশ্বাসের হাতটি রেখে তাকে টানা সুযোগ দিয়ে গিয়েছেন। খারাপ সময়ে তার পাশে থাকা গুরুর হাত থেকে নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কারটি পেয়ে গর্বিত বেনজেমাও। স্মারক হাতে নিয়ে তিনি বলেন, “আমার ছোটবেলায় ফুটবলে অনুপ্রেরণা কেবলমাত্র দুজন জুগিয়েছেন, প্রথমজন হলেন জিনেদিন জিদান এবং দ্বিতীয়জন রোনাল্ডো নাজারিও। যিনি স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন, আজ তার হাত থেকেই এই পুরস্কার পেলাম।”
তিনি আরও বলেছেন, “এই সময়ের আগে আমাকে একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে। তখন আমি ফরাসি দলেও ছিলাম না। কিন্তু আমি কখনই কঠোর পরিশ্রম বন্ধ করিনি বা হাল ছেড়ে বসে যায়নি। আজ এখানে পৌঁছতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। এটা সহজ ছিল না, এটা খুবই কঠিন ছিল। আজ প্রথমবারের মতো এখানে আসতে পেরে, আমি আমার কাজের জন্য খুশি, খুশি এবং চালিয়ে যেতে চাই। সেইসঙ্গে আমার পরিবার, আমার সতীর্থ, আমার কোচ, আমার সাপোর্ট স্টাফ প্রত্যেককেই ধন্যবাদ। এটি ব্যক্তিগত পুরস্কার হলেও, তাদের ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না।
গত ১৫ বছরে প্রথমবার ব্যালন ডি’অর-এর শীর্ষ তিন ফুটবলারদের মধ্যে ছিলেন না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বা লিও মেসির মধ্যে একজনও। রোনাল্ডো ৩০ জনের তালিকায় ২০তম স্থানে ছিলেন এবং লিওনেল মেসি ৩০ জনের তালিকাতেই জায়গা পাননি। বায়ার্ন মিউনিখ ও প্রাক্তন লিভারপুল ফরোয়ার্ড সাদিও মানে গতকাল বেনজেমার পরে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। মাঠের বাইরে জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি সক্রেটিস ট্রফিও পেয়েছেন। ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন তৃতীয় এবং পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেওয়ানডোস্কি এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিলেন। বর্ষসেরা স্ট্রাইকার হিসাবে গার্ড মুলার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন বার্সেলোনা তারকা। বর্ষসেরা গোলরক্ষক হিসাবে ইয়াসিন ট্রফি জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদের বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কুর্তুয়া। মহিলাদের বিভাগে শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসাবে টানা দ্বিতীয়বার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন বার্সেলোনা ফেমিনি দলের তারকা ফুটবলার অ্যালেক্সিয়া পুটেয়াস। আশ্চর্যের ব্যাপার যে শ্রেষ্ঠ ক্লাবের সম্মানের বিচারে ৩ নম্বরে ছিল লা লিগা ও ইউসিএল জেতা রিয়াল মাদ্রিদ। ইপিএল জেতা ম্যান সিটির হাতে দেওয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠ ক্লাবের সম্মান।
জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির উপর দিয়ে ভেসে চলছে বিমান, তরুণীর ভিডিও দেখে হতবাক নেটমাধ্যম!