বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিহারের (Bihar) গয়া (gaya) জেলার একটি গ্রাম শুধুমাত্র রাজ্যের জন্য নয়, সারা দেশের (India) জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। 1914 সালে বসতি স্থাপন করা এই গ্রামের লোকেরা আজ পর্যন্ত কোনও এফআইআর দায়ের করেনি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সবকিছু… সাধারণত ছোটখাটো বিষয় নিয়ে পারস্পরিক ঝামেলা হলেও বিষয়টি থানা থেকে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু বিহারের একটি গ্রামের লোকেরা গত 108 বছরে একটিও এফআইআর দায়ের করেনি। একবিংশ শতাব্দীতে নিশ্চয়ই গোটা দেশকে বার্তা দিচ্ছে বিহারের এই গ্রাম। আসলে আমরা গয়া জেলার আমাস ব্লকের বনকট গ্রামের কথা বলছি।
1914 সালে বসতি স্থাপন করা এই গ্রামের ইতিহাসে 108 বছরের। বর্তমানে গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় আড়াই শতাধিক হলেও আজও এখানকার মানুষ পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের সাথে বসবাস করে। সামান্য কিছু অশান্তি হলে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। এখানকার মানুষ এখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি যে তাদের থানায় যেতে হবে। এ কারণেই থানা-আদালতের মুখও দেখেনি গ্রামের মানুষ। বনকট গ্রামের জন্য পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
আমাস ব্লক গয়া সদর থেকে 8 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বনকট গ্রামটি সম্পূর্ণ অপরাধমুক্ত। এই গ্রামে প্রধানত যাদব, চন্দ্রবংশী এবং মহাদলিত সমাজের লোকেরা বাস করেন। তবে সবাই এই গ্রামে সংহতির সাথে বাস করেন। সুখে-দুঃখে একে অপরের হাত ধরে এগিয়ে চলেন। ফলে এই গ্রামটি জেলার অন্যান্য গ্রামের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। এখনকার অধিবাসীদের বক্তব্য যে আপনারাও পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের সাথে বসবাস করলে সুখী হবেন।
গ্রামের বৃদ্ধ উপেন্দ্র যাদব ও দুধেশ্বর যাদব জানান, এ গ্রামের মানুষ মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গ্রামের মানুষও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। শিশুদের জন্য স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, নল জল যোজনা, নলি গালি যোজনা, রাস্তা প্রকল্প নিয়ে গ্রাম সম্পূর্ণ খুশি৷ দুই-তিন প্রজন্ম শেষ হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত একজনের বিরুদ্ধেও মামলা হয়নি। এই বিশেষত্বের কারণে এই গ্রামটি জেলায় আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছে। সমাজে গ্রামবাসীদের থেকে সংগৃহীত অর্থ অভাবী বা আর্থিকভাবে দুর্বল গ্রামবাসীদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া আর্থিক শাস্তি থেকে প্রাপ্ত অর্থ অভাবগ্রস্তদের চিকিৎসা বা বিয়েতে ব্যবহার করা হয়।