বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) আর এর ওপর দলের ভিতর গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরম আকার নিতে শুরু করেছে। অতীতে একাধিক সময় দলের ভিতর গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে আর গতকাল সেই চিত্রই উঠে আসলো কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙ্গা এক নম্বর ব্লক এলাকা থেকে, যেখানে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের (Saayoni Ghosh) উপস্থিতিতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে দলেরই দই গোষ্ঠী।
গতকাল মাথাভাঙ্গা এক নম্বর ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ এবং দলের অন্যান্য নেতা নেত্রীরা। অভিযোগ, অনুষ্ঠান মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ। কিন্তু সেই সময় আচমকাই তাঁকে বাধা দিতে উদ্যত হন সমিতির সদস্য নজরুল হক। এই ঘটনায় তৎক্ষণাৎ চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ব্লক সহ-সভাপতির গাড়িতে হামলা চালানোর পাশাপাশি তাঁকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নজরুলের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনার প্রসঙ্গে প্রবীণ নেতা আব্দুল জলিল বলেন, “ব্লক সহ-সভাপতি ছাড়াও জিতেন বর্মন এবং মজিরুল হোসেনের বিরুদ্ধে মূলত রাগ ছিল নজরুলের। সেই কারণেই গতকাল মঞ্চে উঠে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলেন উনি। তবে এই ঘটনা অনুচিত। যদি ওনার কোনরকম অভিযোগ থাকে, তাহলে দলের ভিতর সেটা বলতে পারতেন। এভাবে প্রকাশ্যে উত্তেজনা ছড়ানো কখনোই উচিত হয়নি। এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেয়ারম্যান এবং জেলা সভাপতি নেবেন।”
অপরদিকে, যার গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ, সেই ব্লক সহ-সভাপতি আলিজা রহমান বলেন, “আব্দুল জলিল কোনরকম খারাপ মন্তব্য করেন নি। কিন্তু পরবর্তীতে নজরুল হক তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ এবং অন্যান্য নেতা ও নেত্রীদের উপস্থিতিতে আচমকাই চেঁচামেচি শুরু করে। এমনকি পরবর্তীতে আমার গাড়িতে হামলা চালানোর পাশাপাশি খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়।”
যার বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ, সেই নজরুল হক আব্দুল জলিলের ওপরই দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “মঞ্চে বক্তৃতা রাখার সময় আব্দুল জলিল আমার সঙ্গে দলের অন্যান্য নেতাদের তুলনা করেন। সেই কারণেই আমি মঞ্চে উঠে তাকে বাধা দিই। মুজিরুল হোসেন দলের পদ বিক্রি করার জন্য টাকা আত্মসাৎ করেন। তাঁর সঙ্গে তুলনা করা অনুচিত।”
যদিও দলের ভিতর এই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে বিশেষ কোনো মন্তব্য করতে চাননি জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান। তাঁর দাবি, “আমি এবং জেলা সভাপতি দুজনেই এলাকায় ছিলাম না। আগে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।”