বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রথম থেকেই নতুন কিছু করতে চেয়েছিলেন তিনি! পাশাপাশি, সিনেমার প্রতিও তাঁর অমোঘ আকর্ষণ রয়েছে। স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিও তৈরি করেছেন ওই যুবক। এমতাবস্থায়, ক্যামেরা এবং স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করতে করতেই তিনি অনুধাবন করেন যে, বর্তমান সময়ে মানুষের কাছে কথা বলার জন্য প্রয়োজনীয় সময় আর নেই। সেই দিকটিকে মাথায় রেখেই নবীন এবং প্রবীণ প্রজন্মকে একজোট করতে তিনি নেন অভিনব এক পরিকল্পনা। বাঙালির আবেগ “চা”-এর ওপর ভর করেই তিনি শুরু করেন “অরণ্যের দিনরাত্রি” (Aranyer Din Ratri)।
বর্তমানে যা শিলিগুড়ির গজলডোবার মানুষের কাছে এক পরিচিত নাম। শুধু তাই নয়, শিলিগুড়ির (Siliguri) ছেলে অরুণাভ পালচৌধুরীর ওই ক্যাফের প্রধান আকর্ষণ হল এক টাকার চা। হ্যাঁ, সাম্প্রতিককালের মুদ্রাস্ফীতির সময়েও এক টাকার চা’ই “অরণ্যের দিনরাত্রি”-কে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে। তবে, চায়ের পাশাপাশি, অরুণাভর ওই ক্যাফেতে পাওয়া যায় বিরিয়ানি থেকে শুরু করে আরও একাধিক পদ।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ২০১৭ সালে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন অরুণাভ। এমনকি, ওই দুর্ঘটনায় ডান পা কেটে বাদ দিতে হয় তাঁর। যদিও, জীবনযুদ্ধের কঠিন ময়দানে পিছিয়ে থাকেন নি তিনি। বরং, মনের জোরকে সম্বল করেই তিনি তাঁর লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। কৃত্রিম পা লাগিয়েই অরুণাভ এখন হাসিমুখে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন “অরণ্যের দিনরাত্রি”-কে।
এই প্রসঙ্গে অরুণাভ জানান, “২০২০ সালে ৪ অক্টোবর শিলিগুড়ির সিটি সেন্টারের কাছের একটি রাস্তায় আমি একটি ছোট একটি দোকানে দিয়েছিলাম। সেখানে গরম রসগোল্লা, লুচি এবং খিচুড়ি পাওয়া যেত। তারপরে আমি গজলডোবায় একটি ছোট ক্যাফে শুরু করি। যার নাম দিই ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। এখন আমার এই ক্যাফেতে অনেক খাবার পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এক টাকার চা। সকলের মাঝে আড্ডার পরিসর তৈরি করতেই এই দাম রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ক্যাফেতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের খাবার পাওয়া যায়।”
পাশাপাশি, ওই ক্যাফে থেকে রোজগারের প্রসঙ্গটিও সামনে এনেছেন অরুণাভ। তিনি বলেন, “বর্তমানে গজলডোবাতে পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে। যার ফলে দৈনিক প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে।” এদিকে, ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে অরুণাভর এই অভিনব উদ্যোগের প্রসঙ্গ। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, চলতি বছরের পুজোর সময় ঝালমু়ড়ি এবং চায়ের স্টল দেওয়ার মাধ্যমে রোজগারের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমতাবস্থায়, মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠতে শুরু করেছিল। তবে, অরুণাভ কিন্তু পুজোয় স্টল দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ওই সময়ে রমরমিয়ে তাঁর ব্যবসা চলেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।