বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: টানা দুই ম্যাচ হারের পর অবশেষে স্বস্তির জয় পেল ইস্টবেঙ্গল। গুয়াহাটির বুকে মশাল জ্বালিয়ে এলেন ক্লিয়েটন, কিরিয়াকু, ডোহার্টিরা। দলের খেলায় এখনও প্রচুর সমস্যা আছে। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের মতন ভাঙাচোরা দল না হয়ে অন্য কোনও দল হলে হয়তো আজকে ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতে পারত। ডার্বির আগে এই ফল ফুটবলারদের মনোবল বাড়ালেও চিন্তিত হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। কিন্তু আজকের রাতটা আর সেইসব চিন্তাভাবনায় কাটাতে রাজি নন লাল-হলুদ ভক্তরা। চলতি মরশুমের প্রথম আইএসএল ম্যাচ জয় উদযাপন করছেন সকলে।
সমর্থকদের যে ফুটবলারকে নিয়ে সমস্যা ছিল, মৌখিকভাবে সেই সুমিত পাসির পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেও আজকের অ্যাওয়ে ম্যাচের একাদশে তাকে রাখেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। প্রথম একাদশে ছিলেন না অ্যালেক্স লিমাও। জর্ডন ডোহার্টি ও চারালাম্পোস কিরিয়াকুকে দিয়ে মিডফিল্ড সাজিয়ে মাঝমাঠে সৃজনশীলতা আনতে চেয়ে ছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
যদিও প্রথমার্ধে সেই চেষ্টার কোনো প্রতিফলন চোখে পড়েনি। ইস্টবেঙ্গল যে প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল তার কারণ হলো নর্থইস্ট ডিফেন্সের ভুল। ইরশাদ ও জ্যাকবসনের ভুল বোঝাবুঝিতে দের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে বক্সের মধ্যে আক্রমণ শানান নাওরেম মহেশ এবং ক্লিয়েটন সিলভা। প্রাক্তন লাল-হলুদ গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে ফাস্ট বারে পরাস্ত করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এরপর গোটা প্রথমার্ধে নর্থইস্ট একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল। কখনও গোলরক্ষক কমলজিৎ-এর তৎপরতায় কখনও বা ভাগ্যের জোরে রক্ষা পান ইভাব গঞ্জালেসরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলের খেলার বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। একের পর এক সুযোগ তৈরি হতে থাকে। ভিপি সুহের দুবার দলকে এগিয়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন। শেষ পর্যন্ত সেই সুহেরের পাস থেকেই দূরপাল্লার চোখধাঁধানো শটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাইপ্রাসের কিরিয়াকু। দ্বিতীয় গোলের ৩২ মিনিট পরে পরিবর্ত হিসেবে নামা মোবাসিরের বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে চমৎকার ভাবে অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ৩-০ করে দেন ডোহার্টি।
এই সময়ে যখন সকলে ভাবছিল তিনটি গোল করে ক্লিনশিট নিয়ে মাঠ ছাড়বে ইস্টবেঙ্গল ঠিক তখনই অতিরিক্ত সময়ে এমিল বেণীর দুরন্ত কর্নার থেকে ব্যবধান কমানো নর্থইস্টের ৩৬ বছরের বিদেশি ব্রিটিশ ফুটবলার ডার্বিশায়ার। হবে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছিল। ৩-১ ফলে ম্যাচ জেতে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ জিতে পয়েন্টস টেবিলে সাত নম্বরে উঠে এলো লাল-হলুদ ব্রিগেড। তবে যে কোন সাধারণ ফুটবল দর্শক এটা বুঝবেন যে ইস্টবেঙ্গল আজ জিতলেও দলের খেলায় অনেক থামতি ছিল। ডিফেন্সে ইভান গঞ্জালেজ একেবারেই ভরসা দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করেননি। একবার নর্থইস্টের ফুটবলারের একটি শট বারে লেগে বাইরে যায়। পরের ম্যাচে এটিকে মোহনবাগানের মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল। ডার্বিতে এই ভুলগুলি করলে যে আজকের ম্যাচের মতন ছাড় পাওয়া যাবে না সেকথাও খুব ভাল করেই জানেন ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। কাজেই এই জয়ও পুরোপুরি স্বস্তিতে থাকা হচ্ছে না তাদের।