বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিক টেট (Primary Tet) সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। একদিকে যখন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছে, আবার অপরদিকে এই মামলায় তদন্তের মাধ্যমে সিবিআই (CBI) এবং ইডির (Enforcement Directorate) হেফাজতে বহু তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা মন্ত্রীরা। সম্প্রতি, এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattachary। একই সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে (Tapas Mondal) তলব করে ইডি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এদিন ফের একবার জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে তাপসকে। চলছে জেরা।
সম্প্রতি, দুর্নীতি মামলায় তলব করা হয় তাপস মণ্ডলকে। এক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র রয়েছে বলে অনুমান ইডির। সেই কারণেই দীর্ঘক্ষন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাপসকে আর এদিন পুনরায় একবার জেরার জন্য তলব করা হলো মানিক ঘনিষ্ঠকে। এক্ষেত্রে তাপস মণ্ডলের ব্যবস্থা করে দেওয়া অনলাইন ক্লাস রয়েছে ইডির নজরে। অনলাইন ক্লাসে কোনরকম দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সেগুলি খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই ক্লাসের সকল নথি নিয়ে তাপসকে তলব করা হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, ইডির দাবি অনুযায়ী, ‘প্রশ্ন ফাঁস’ কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েলেন খোদ মানিক ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলেরও হাত রয়েছে বলে দাবি করতে থাকে তদন্তকারী সংস্থা। এক্ষেত্রে তাপসের ৩৫ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপর নজর রাখে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে তাপস মণ্ডলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া একাধিক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের কি সম্পর্ক রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি, তাপস মণ্ডলের নামে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি NGO এবং বেসরকারি সংস্থার সন্ধান মিলেছে। এগুলির মাধ্যমে দুর্নীতির টাকা চালান করা হতো বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে বীরভূমের তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীর যোগসূত্র রয়েছে বলে ইতিমধ্যে খবর সামনে এসেছে। ওই তৃণমূল নেতার নামে একাধিক টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার এবং বিএড কলেজ রয়েছে বলে খবর আর এই পরিস্থিতিতে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরপর তলব মাঝে বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক টেট সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার পাশাপাশি এই মুহূর্তে ইডির নজরে উঠে এসেছে চিটফান্ড প্রতারণা কাণ্ড। সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের নামে ‘মিনার্ভা ফিনান্স’ নামে একটি চিটফান্ড সংস্থা পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল, যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সে। এছাড়াও সিপিএম আমলে দমকল মন্ত্রীর সঙ্গে যোগসূত্র ছিল তার, যার মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তিদের বেআইনিভাবে চাকরি প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে এদিন জেরা শেষে গোয়েন্দারা নয়া কোন তথ্য হাতে পান, সেটাই দেখার।