বাংলাহান্ট ডেস্ক : এতদিন মেয়েদের পক্ষে আইন বলে অনেক মেয়েরাই তার সুযোগ নিত। এতদিন শুধুমাত্র স্বামী “মদ্যপ ও একাধিক নারী সংসর্গ করে” অভিযোগ তুলে কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারতেন স্ত্রী। কিন্তু বর্তমানে কোন প্রমাণ ছাড়া এই অভিযোগ গ্রাহ্য করবে না কোর্ট। সোজাসুজি জানিয়ে দেওয়া হল বোম্বে হাইকোর্টের তরফ থেকে। উল্টে কোনো প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের অভিযোগ তোলা হলে তাকে “নিষ্ঠুরতা” বলে গণ্য করা হবে এমনটাও জানানো হলো কোর্টের তরফ থেকে। এই ঘোষণা করার সাথে সাথে কোর্টে এই বিষয়ক একটি চলতি মামলার রায়ও দেওয়া হল। পুনের অধিবাসী এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল বিচারপতিদের নিয়ে।
পুনের অধিবাসী এক পঞ্চাশ বছর বয়স্কা মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার স্বামী পুনের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক ছিলেন যিনি বর্তমানে মৃত। ২০০৫ সালে মহিলা এই অভিযোগ করার পর পারিবারিক আদালত সেই বিয়ে ভেঙে দেবার পক্ষে রায় দান করে। কিন্তু মহিলা তারপরেও সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বোম্বে হাইকোর্টে পুনরায় মামলা করেন। তারপর ২০০৫ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত কেটে যায় দীর্ঘ সময়। মহিলার স্বামী ও ইতিমধ্যেই গত হয়েছেন। এতদিন পর বোম্বে হাইকোর্টও পারিবারিক আদালতের রায়কেই গ্রাহ্য বলে পুনরায় ঘোষণা করেন। প্রসঙ্গত ওই ব্যক্তির অর্থাৎ যার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তিনি মারা গেলে তার উত্তরাধিকারীকে আদালতে রায়ের দিন উপস্থিত থাকতে হয়।
ডিভিশন বেঞ্চের দুই প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, কোন প্রমাণ ছাড়া স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যে চরিত্রহীনতার অভিযোগ করে কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া একপ্রকার “নিষ্ঠুরতার” পরিচয় দেয়। অভিযোগকারী মহিলা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তিনি অবসরের সময়ে ছিলেন পুনের সেনা মেজর যার একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মানজনক সামাজিক অবস্থান ছিল। এই অবস্থায় তার স্ত্রী বিনা প্রমাণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তার চরিত্রহানে ঘটাতে চাইলেন, এটি হল আসলেই এক প্রকার নিষ্ঠুরতা।
মৃত অভিযুক্ত ব্যক্তির তরফের যে আইনজীবী কোর্টে উপস্থিত ছিলেন তিনি অভিযুক্তর পক্ষে জানান যে, অভিযোগকারীনি মহিলা নিজেই তার স্বামীর উপর নানা প্রকার মানসিক অত্যাচার চালাতেন। এমনকি নিজের নাতি-নাতনিদের সাথেও তাকে সম্পর্ক রাখতে দিতেন না। সবকিছু শোনার পর বোম্বে হাইকোর্ট পারিবারিক কোর্টের রায়কেই বহাল রেখেছেন।