বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতবর্ষে (India) এমন অনেক গাছপালা ও ভেষজ পাওয়া যায় যেগুলি একাধারে স্বাস্থ্যে জন্যেও ভালো এবং রূপচর্চার কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ঔষধি উদ্ভিদগুলি সাধারণত পাওয়া যায় হিমালয় পাহাড়ের গভীর জঙ্গলে। কিন্তু আপনি যদি চান তাহলে আপনার বাড়িতেও এমন কিছু উদ্ভিভ লাগাতে পারেন। আজকের প্রতিবেদনে তেমনই একটি গাছের ব্যাপারে জানাবো আপনাদের।
সিন্দুর উদ্ভিদ (Sindur Plant) বা বিক্সা ওরেলানা হল এমনই একটি ঔষধি গাছ। মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলের বাসিন্দারা এটিকে আখিয়োটে নামেও ডেকে থাকে। ভারতে যদিও এই উদ্ভিদের নাম সিন্দুরি এবং কপিলা। এই উদ্ভিদ থেকে এমন কিছু জিনিস তৈরি হয় যা আমাদের সকলের বাড়িতেই ব্যবহৃত হয়। বিশেষত মহিলারা এগুলি ব্যবহার করে থাকেন। সিন্দুর উদ্ভিদের থেকে তৈরি হয় লিপস্টিক ও সিঁদুর।
দেশের কিছু রাজ্যে এই গাছটিকে লিপস্টিক ট্রি-ও বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও চুলের রং, নেলপলিশ, সাবান, লাল কালি ও রং তৈরি করতেও ব্যবহার করা হয় এই সিঁদুর গাছ। এর ফল থেকে তৈরি তেল ব্যবহার করা হয় চিজ, মাখন ও বিভিন্ন ধরনের সস তৈরি করতে। আপনিও আপনার বাড়িতে এই গাছের চাষ করতে পারেন।
কীভাবে এই গাছটি লাগাতে হবে? খুব সহজ। প্রথমে এই গাছের বীজ অথবা চারা জোগাড় করুন। এরপর সার, পাত্র, মাটি ও জলের ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর ভালো করে মাটি তৈরি করে এটি টবে রেখে পুরো এক দিনের জন্য রোদে রেখে দিন। এরপর দুই মগ কম্পোস্ট মাটিতে দিয়ে ভালো করে তা মিশিয়ে দিন মাটির সঙ্গে। এর মধ্যে বীজ বা চারা বপন করুন এবং জল দিন। দিন কয়েকের মধ্যেই দেখবেন বীজ অঙ্কুরিত হচ্ছে। আপনি যদি চারা রোপণ করে থাকেন, তাহলে দেখবেন এটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিঁদুর গাছ লাগানোর সময় খেয়াল রাখুন মাটি যেন উর্বর থাকে। কম্পোস্টেও প্রচুর পুষ্টি থাকতে হবে। আপনি চাইলে জৈব সারও ব্যবহার করতে পারেন। আবার গরু-মহিষের গোবরও সার হিসেবে মাটির সঙ্গে পাত্রে রাখতে পারেন। সিঁদুর গাছে শুরুতে ২ থেকে ৩ দিন পরপর জল দিতে হবে। এরপর গাছটি একটু বড় হতে শুরু করলে প্রতিদিন জল দিতে হবে। একই সময়ে গাছটি ৪ ইঞ্চির বেশি বৃদ্ধি পেলে সপ্তাহে ২ বার জল দিতেও পারেন।
এছাড়াও সিঁদুর গাছে ফল ধরতে শুরু করলে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে যাতে ফলে পোকা না ধরে। চাইলে বাড়িতে থাকা বেকিং সোডা, লেবুর রস বা ভিনিগারও ব্যবহার করতে পারেন। এটি গাছের কোনও ক্ষতি করবে না। সিঁদুর গাছ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করে। এই ফলটি সম্পূর্ণ লাল হতে এবং পাকতে ১০ থেকে ১২ মাস সময় নেয়। ফল পেকে গেলে আপনি এটিকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন।