বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার ‘কিংপিন’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya), এ বিষয়ে অতীতে একাধিকবার দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা আর এবার তাদের হাতে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য! করোনা পরিস্থিতিতে বিএড কলেজের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের কাজ হতে ‘অসাধু’ উপায়ে টাকা আত্মসাৎ করার মাধ্যমে নিজের পকেট ভরিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। অনলাইন ক্লাস করানোর নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয় এবং সেগুলি সম্পূর্ণটাই চলে যায় মানিকের ছেলের অ্যাকাউন্টে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হতে বলে অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই ঘটনায় মানিক ভট্টাচার্যের পাশাপাশি তাঁর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের হাত ছিল এবং সম্পূর্ণটাই জানতেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলে ইডির হাতে গ্রেফতার হন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। একইসঙ্গে ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
পাশাপাশি বর্তমানে আরও একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বিএড কলেজের ৪৯ হাজার ৪০০ জন পড়ুয়াদের কাছ থেকে অনলাইনে ক্লাস করানোর নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হতো। এক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষকে হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হতো বলে অভিযোগ এবং এভাবেই প্রায় ২.৫ কোটি টাকা আদায় করেন মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর সহযোগীরা।
ইডির দাবি অনুযায়ী, তদন্ত চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে বেশ কয়েকটি কথোপকথনের সূত্র ধরেই বেশ কয়েকটি বিষয় বর্তমানে তাদের সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে সৌভিকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার সন্ধান পায় তারা। এই টাকার সম্পূর্ণটাই বিএড পড়ুয়াদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছিল। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, করোনার সময় অনলাইনে ক্লাস করার জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হতো এবং এটি তাপস মণ্ডলের হাত হয়ে পৌঁছে যেত মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।
এক্ষেত্রে সম্প্রতি তাপস মণ্ডলের লেখা একটি চিঠির সূত্র ধরেই বর্তমানে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে উক্ত চিঠিতে প্রতিটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীকে তাদের নামের তালিকা, মেইল আইডি এবং ৫০০ টাকা করে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সেই চিঠিতে সই রয়েছে তাপসবাবুর। উল্লেখ্য, তাপস মণ্ডলের পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্য এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অজান্তে যে এই সকল দুর্নীতি হয়নি, সে বিষয়েও দাবি করেছে ইডি। সূত্রের দাবি, এই মামলায় বিএড এবং ডিএলএড কলেজ কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রসঙ্গে আরও একাধিক তথ্য হাতে পেতে তৎপর গোয়েন্দা অফিসাররা।