বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে বেকায়দায় তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। একদিকে যখন সিবিআই এবং ইডির তদন্ত মাঝে হেফাজতে একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রী, আবার অপরদিকে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ মাঝে শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব একাধিক মহল। অর্থনৈতিক দিক থেকেও বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে রাজ্য সরকার। এর মাঝেই বর্তমানে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ করে চলেছেন তিনি। সেই ধারা বজায় রেখে বর্তমানে শুভেন্দুর সংযোজন, “রাজ্য সরকারের আবেদন যদি কেন্দ্র মঞ্জুর না করে, তবে আগামী মাসে সরকারি কর্মীদের বেতন দিতে পারবে না তৃণমূল কংগ্রেস।”
এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করার মাধ্যমে এহেন মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলীয় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করেও একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “বর্তমানে রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী দিনে কি হতে চলেছে, কেউ বলতে পারবে না। বর্তমানে আরবিআই-এর কাছে ১০০০০ কোটি টাকা চেয়ে একটি ফাইল পাঠিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যদি সেই ফাইল পাশ না করে, তাহলে আগামী মাসে সরকারি কর্মীদের বেতন আটকে যেতে পারে।”
উল্লেখ্য, একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে অস্বস্তি বেড়ে চলেছে শাসক দলের। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক দিক থেকেও বেসামাল সরকার। একের পর এক প্রকল্পে কেন্দ্র দ্বারা রাজ্য তার প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ, আবার অপরদিকে রাজ্যের কোষাগারে পর্যাপ্ত অর্থ নেই বলেও একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। পাশাপাশি এবার শুভেন্দুবাবুর বক্তব্যে নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি হল। এক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের বেতন যদি আটকে যায়, তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে বাংলার পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে উঠে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন।
এদিন বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও একের পর এক আক্রমণ শানাতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি বলেন, “ডেঙ্গু হোক কিংবা ম্যালেরিয়া, কোন রোগেরই চিকিৎসা ঠিকমতো হয় না বাংলায়। মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন, অথচ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির লোক (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) বিদেশে যাচ্ছেন চিকিৎসা করানোর জন্য, যেখানে ১০ কোটি টাকা খরচ করে আসছেন।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চোখের অপারেশন করানোর জন্য আমেরিকায় রওনা দেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অস্রোপচার করিয়ে ইতিমধ্যে ফিরেও এসেছেন তিনি। ফলে বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলার পাশাপাশি শুভেন্দুর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই ছিলেন, তা বলাবাহুল্য।