বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: আরও একটা ডার্বি, আরও একবার হতাশাই সঙ্গী ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। অপরদিকে ফের দুর্দান্ত জয় পেয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন সবুজ মেরুন সমর্থকরা। এই নিয়ে আইএসএলে টানা ৫ বার শহরের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারের জ্বালা সহ্য করতে হলো লাল হলুদ সমর্থকদের। ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করে সমর্থকদের একরাশ খুশি উপহার দিলেন জনি কাউকোরা।
গোলরক্ষক কমলজিতের দুটি ভুল, ইস্টবেঙ্গলের বাকি ফুটবলারদের যাবতীয় লড়াই নষ্ট করে দিলো। সার্থক গলুই ও নাওরেম মহেশের মতো ফুটবলাররা ভালো লড়াই করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে। সকলেই জানতো যে খাতায় কলমে জুয়ান ফের্নান্দোর দল অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে ১ পয়েন্ট পেলেই সন্তুষ্ট হতে পারতো লাল হলুদের অনেক সমর্থক। কিন্তু গোটা ম্যাচে পাল্লা দিয়ে লড়াই চালিয়েও এটিকে মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে একবারের বেশি পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি লাল হলুদ ফুটবলাররা।
অপরদিকে এটিকে মোহনবাগান যে অনেক আগে থেকে তৈরি একটা দল, তাদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া যে অনেক বেশি ভালো, তা আরও একবার মাঠে প্রমাণ করলেন প্রীতম কোটালরা। কারণ আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা আজ তারকা ফুটবলার দিমিত্রি পেট্রাটস আজ নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন না। খুব একটা ভালো ছন্দে ছিলেন না লিস্টন কোলাসোও। তা সত্ত্বেও ৫৭ মিনিট নাগাদ হুগো বুমোর নেওয়া দূরপাল্লার শট যখন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষকের ভুলে জালে জড়িয়ে যায় তখন থেকেই ম্যাচের দখল পুরোপুরি ফের নিয়ে নেয় এটিকে মোহনবাগান।
আজ ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের ওপর ঘনঘন চাপ তৈরি করেছিল সবুজ মেরুন ফুটবলাররা। কিন্তু চুংগুঙ্গা, ইভান গঞ্জালেজরা সেই প্রাথমিক চাপ সামলে নেওয়ার পর পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছিল লাল-হলুদ শিবিরও। এটিকে মোহনবাগানের মতোই তারাও বিপক্ষ ডিফেন্সকে বেশ কয়েকবার কড়া পরীক্ষার মুখোমুখি ফেলেছিল। দুবার ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের জোরালো পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি শ্রী আর শ্রীকৃষ্ণা। প্রথম ৪৫ মিনিট এটিকে মোহনবাগানকেও সমান চাপে রেখেছিল তারা।
কিন্তু ৫৭ মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলের পর ম্যাচের দখল নিতে অসুবিধা হয়নি। ইস্টবেঙ্গলকে তারা তারপর তেড়ে-ফুঁড়ে আক্রমণ করতেও দেয়নি। উল্টে ৬৬ মিনিটে একটি দুর্দান্ত মুভে এবং সেই সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের মার্কিংয়ের ভুলে গোল করে যান মানবীর সিং। এক্ষেত্রেও গোলরক্ষক কমলজিতের কিছুটা দোষ ছিল। ম্যাচের শুরু থেকে লিস্টন, বুমোর মধ্যে যে কম্বিনেশন গুলো ঠিকঠাক তৈরি হচ্ছিল না সেগুলি বারবার করে তৈরি করে দ্বিতীয়ার থেকে ইস্টবেঙ্গলকে অনেক চাপে ফেলেছিল এটিকে মোহনবাগান। পাল্টা আক্রমণ শানানোর যে উদ্দেশ্যে এলিয়ান্দ্রো ও অনিকেত যাদবকেও মাঠে এনেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। এলিয়ান্দ্রো খারাপ খেলেননি। কিন্তু এটিকে মোহনবাগান ডিফেন্স এর কাছে ইস্টবেঙ্গলের যাবতীয় আক্রমণের জবাব ছিল। তাই শেষদিকে চাপ বাড়িয়েও একবারও গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি লাল হলুদ ফুটবলাররা। ম্যাচ হেরে পয়েন্টস টেবিলে ৮ নম্বরে নেমে গেল ইস্টবেঙ্গল। কঠিন প্রতিপক্ষ মুম্বাই সিটি এফসির বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে মাঠে নামার আগে এই কলকাতা ডার্বি জয় আত্মবিশ্বাস বাড়াবে সবুজ মেরুণ শিবিরের।