বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের একবার অবাক ফতোয়া কেন্দ্রে মোদী সরকারের (Modi Government)। প্রতিটি রাজ্যের ওপর এ ফতোয়া চাপানো নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অতীতে অবশ্য একাধিক সময়ে এহেন কর্মকাণ্ড ঘটাতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্র সরকারকে। এবারও হলো না তার অন্যথা। ব্যর্থতার সকল দায় রাজ্যের ঘাড়ে চাপানোর পাশাপাশি জরিমানার অঙ্ক স্থির করে দিল কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মত একাধিক প্রকল্পে বাবদ কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে বিজেপি সরকার বনাম রাজ্য সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত। একদিকে যখন রাজ্য সরকার দাবি করে চলেছে যে, কেন্দ্রের তরফ থেকে বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা পাচ্ছে না তারা। সেই কারণে বহু জায়গায় কাজ বন্ধ করতে হয়েছে। আবার অপরদিকে, কেন্দ্র সরকারের দাবি অনুযায়ী, এক্ষেত্রে প্রকল্পগুলির নাম পরিবর্তন এবং প্রকল্প বাবদ কোথায় কত খরচ হয়েছে, সেই হিসেব কেন্দ্রকে পাঠাচ্ছে না রাজ্য। সেই কারণেই অনুদান একপ্রকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই সকল ইস্যু নিয়ে যখন সরগরম বাংলা সহ গোটা দেশ, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এবার অবাক ফতোয়া জারি করলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, দেশের বুকে ক্ষমতায় আসার পরেই কংগ্রেসের ‘ইন্দিরা আবাস যোজনা’-র নাম পরিবর্তন করার মাধ্যমে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ করে বিজেপি সরকার। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে দেশের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষের মাথার ওপর ছাদ হবে বলে অভূতপূর্ব ঘোষণা করে কেন্দ্র। তবে এক্ষেত্রে সেই উদ্দেশ্যে এক প্রকার ব্যর্থ হয়েছে। ২০২২ শেষের পথে হলেও এখনো পর্যন্ত বহু নাগরিকের জন্য ছাদের বন্দোবস্ত করতে পারেনি তারা আর সেই কারণেই এবার ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়ি নির্মাণের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হলো।
কেন্দ্রের নয়া ঘোষণা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা শেষ করার নয়া সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪। গ্রামীণ ক্ষেত্রে অবশ্য সেই সময় ৩১ শে মার্চ ধার্য করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যগুলিকে তাদের টার্গেট স্থির করে দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানার অঙ্ক ধার্য করেছে কেন্দ্র। একদিকে যখন বাংলা সহ আরো একাধিক রাজ্য গুলি কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পায়নি বলে অভিযোগ তুলে চলেছে, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের নির্দেশিকা, যদি কাজে দ্রুততা না নিয়ে আসা হয়, তবে প্রকল্প বাবদ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ফান্ড হিসেবে রাজ্যকে যে অর্থ প্রদান করা হয়, তা কেটে নেওয়া হবে।
এক্ষেত্রে কাজে দেরি হলে প্রত্যেক বাড়ি পিছু মাসে ১০ টাকা করে কাটা হতে চলেছে এবং যত সময় বাড়বে, তত জরিমানা বাড়তে চলেছে বলে ঘোষণা কেন্দ্রের। বলে রাখা ভালো, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ ক্ষেত্রে) ২ কোটি ৯৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও বর্তমানে ২ কোটি সামান্য বেশি তৈরি করা গিয়েছে। শহরের ক্ষেত্রে সেই মাত্রা অনেকাংশে কম। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের উপর জরিমানার অঙ্ক এবং সকল কাজের দায়ভার চাপানোর মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি যে পাল্টা কৌশল খেলল, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।