বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইউক্রেনের যুদ্ধে (Russia – Eukraine Conflict) বিপাকে পড়েছে পুতিন (Vladimir Putin)। রাশিয়ার এখন প্রয়োজন ভারতের সাহায্য। আর তাই বারবার পুতিনের গলায় শোনা যাচ্ছে ভারতের (India) নাম। রাজধানী মস্কোতে অনুষ্টিত ভলদাই কনফারেন্সে পুতিন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। নিজের ভাষণে পুতিন গোটা বিশ্বকে জানাতে চেয়েছেন আগামী দিনে রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি কী হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতেই পুতিনের ভাষণে বারবার শোনা যায় ভারতের নাম।
এদিনের ভাষণে পুতিন বলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম বিশ্ব এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এরই সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ এবং পরমাণু যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী পশ্চিম বিশ্বের দেশগুলিকে। পুতিন অভিযোগ করে বলেন, ইউরোপ এবং আমেরিকা মহাদেশের রাষ্ট্রগুলি পরমাণু নিয়ে বিপাকে ফেলতে চাইছে রাশিয়া। তাদের উদ্দেশ্য রাশিয়ার সহযোগী দেশ, মূলত ভারত যেন রাশিয়ার পাশ থেকে সরে যায়।’
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অবস্থা বেশ খারাপ। ইউক্রেনের যে সমস্ত এলাকা রাশিয়া দখল করে রেখেছিল সেই সমস্ত জায়গায় দূর্বল হয়ে পড়ছে রুশি সেনা। এরই সঙ্গে রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন যেকোনও মুহুর্তে ‘ডার্টি বম্ব’ হামলা করতে পারে। এই সংকটজনক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে রাশিয়ার একমাত্র ভারতই।
মস্কোর (Moscow) ভালদাই ডিসকাসন ক্লাবের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পুতিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেশপ্রেমিক বলে উল্লেখ করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এদিন তিনি বলেন, ‘মোদির নেতৃত্বে ভারতে অনেক কিছু হয়েছে।’
পুতিনের বলেন, ‘মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া আইডিয়া অর্থনৈতিক এবং নীতিগতভাবে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীর সবথেকে বড় গণতন্ত্র হওয়ার জন্য গর্ববোধ করা উচিত ভারতের।’ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা (British Colony) থেকে বেরিয়ে ভারত যে উন্নতি করেছে, তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও বলেন, ‘দেড়শো কোটি মানুষের দেশে এই মাত্রায় উন্নয়ন সকলের সম্মান ও প্রশংসা জিতে নিয়েছে।’
এর পরেই তিনি ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কের কথা বলেন। উভয় দেশের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক (Special Relationships) রয়েছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বহু দশকের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে। আমাদের মধ্যে কখনোই কঠিন কোনও সমস্যা হয়নি। পরস্পরকে সমর্থন করে গেছি। এখনও তা-ই হচ্ছে। আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতেও তা-ই হবে।’ এরপরই ভারতের কৃষির জন্য সারের জোগান বাড়ানোর কথা মোদি তাঁকে বলেছেন বলেও জানান পুতিন। প্রায় সারের সরবরাহ ৭.৬ গুণ বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। ভারত – রাশিয়া সম্পর্কের কথা বলে ভারতকে পাশে পাওয়ার বার্তাই পুতিন দিতে চেয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।