বাংলা হান্ট ডেস্ক: মালয়েশিয়ার (Malaysia) বিমান সংস্থা এয়ারএশিয়া (AirAsia) এবার ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সংস্থা AirAsia India-র অবশিষ্ট ১৬.৩৩ শতাংশ শেয়ার Air India-র কাছে বিক্রি করার জন্য একটি চুক্তি করেছে। গত বুধবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। উল্লেখ্য যে, AirAsia India ভারতে ২০১৪ সালের জুনে উড়ান শুরু করে। এটি Tata Group এবং AirAsia-র একটি যৌথ উদ্যোগ ছিল।
এদিকে, ভারতে AirAsia গ্রুপের আট বছরের যাত্রা খুবই কঠিন ছিল। মূলত, ওই সংস্থার লোকসান ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অবশেষে, কোম্পানিটি তার অবশিষ্ট অংশীদারিত্ব টাটা গ্রুপের নেতৃত্বাধীন Air India-র কাছে ১৫৫.৬৪ কোটি টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমতাবস্থায়, এই বিক্রির ফলে কোম্পানিটির কোনো ক্ষতিও হবে না, আবার লাভও হবে না বলে জানা গিয়েছে।
AirAsia India-তে বর্তমানে Tata Sons-এর ৮৩.৬৭ শতাংশ শেয়ার এবং AirAsia Investments-এ ১৬.৩৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এমতাবস্থায়, কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া (CCI) চলতি বছরের জুন মাসে Air India-কে AirAsia India-র সম্পূর্ণ অংশীদারিত্ব কেনার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। ইতিমধ্যেই, Air India লো-কস্ট এয়ারলাইন গঠনের জন্য AirAsia India এবং Air India Express-কে একত্র করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই প্রসঙ্গে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া শেষ হতে এক বছর সময় লাগতে পারে। পাশাপাশি, এর জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপও গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন AirAsia India-র সিইও সুনীল ভাস্করন এবং Air India Express-এর সিইও অলোক সিং।
যাত্রাপথ কঠিন ছিল: উল্লেখ্য যে, AirAsia India ২০১৪ সালের ১২ জুন প্রথম উড়ান সম্পন্ন করে। কিন্তু, ক্রমাগত লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছিল সংস্থা। এমতাবস্থায়, ২০২২-এর অর্থবর্ষে, কোম্পানির লোকসান ৪২ শতাংশ বেড়ে ২,১৭৮ কোটি টাকা হয়ে যায়। যার ফলে ভারতে কোম্পানির ব্যবসা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া আদৌ সহজ ছিল না। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে, সংস্থাটি তাদের প্রাক্তন সিইও মিতু চান্দালিয়ার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে। মূলত, তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়।
এমতাবস্থায়, ২০১৮ সালে, CBI AirAsia গ্রুপের সিইও টনি ফার্নান্দেস এবং অন্যান্য আধিকারিকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি নীতি প্রভাবিত করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, তাঁরা দুর্নীতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উড়ানের লাইসেন্স পেতে চেয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। ফলস্বরূপ, AirAsia India-র কাছে ২৮ টি বিমান থাকা সত্বেও তারা আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক উড়ান শুরু করতে পারেনি। এদিকে, IndiGo এবং SpiceJet-এর মত কোম্পানির কঠিন প্রতিযোগিতার কারণে এই কোম্পানিটি কখনোই লাভও করতে পারেনি।