বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। তার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ‘গড়’ গুজরাটে (Gujarat) বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি (Bharatiya Janata Party)। একের পর এক ছক কষে চলেছে তারা আর এবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অর্থাৎ সিএএ (CAA) নিয়ে বড়সড় মন্তব্য করে বসলেন নরেন্দ্র মোদী, যা ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে।
গুজরাট নির্বাচনের পূর্বে একদিকে যখন জয়লাভের উদ্দেশ্যে মরিয়া বিজেপি, আবার অপরদিকে আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেসের মতো দলগুলিও ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার সিএএ নিয়ে নতুন করে কৌশল সাজাতে চলেছে কেন্দ্র। আপাতত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতই মিলছে।
বলে রাখা ভালো, সম্প্রতি পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। এই সূত্রে একটি নির্দেশিকা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ‘নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫’ দ্বারা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতে চলেছে বলে খবর।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে যে সকল হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ এবং জৈন সম্প্রদায়ের শরণার্থীরা এসেছেন, তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতে চলেছে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দ্বারা একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই সূত্রে গুজরাটের মেহসানা এবং আনন্দ, এই দুই জেলায় ইতিমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে; গুজরাট নির্বাচনের পূর্বে যা বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক হতে চলেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আর এর মাঝেই এবার সিএএ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতপ্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে এই সংক্রান্ত একটি বিল পাশ করা হলেও পরবর্তীতে দেশবাসীর বিক্ষোভের মাঝে পিছু হটতে হয় কেন্দ্র সরকারকে। তবে গুজরাট নির্বাচনের পূর্বে বিতর্ক বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পঞ্জাবের মানুষ স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন। তাই তাদের কথা ভেবেই সরকার বিভাজন বিভীষিকা স্মরণ দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করে। একইসঙ্গে যে সকল হিন্দু এবং শিখ পরিবারকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়, তাদের জন্য আমরা নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রচেষ্টার শুরু করে দিয়েছি। শিখ পরিবারগুলি অত্যাচারের মুখোমুখি হয়, তাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়েছি। সরকারের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বের যে সকল প্রান্তে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে, তাদের মধ্যে বিশ্বাস সৃষ্টি হবে, ভারত তাদেরই দেশ।”
প্রধানমন্ত্রীর মুখে নাগরিকত্বের বিষয়টি উঠে আসতে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তবে কি সিএএ কার্যকর হতে চলেছে? জল্পনা উস্কে দিয়ে গতকাল কেন্দ্রের মন্ত্রিসভার সদস্য অর্জুন রাম মেঘওয়াল গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। বনগাঁয় রাস উৎসবে যোগদান করে মেঘওয়াল বলেন, “ভারত সরকারের দ্বারা আইন করা হলেও টেকনিক্যাল কারণে কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে। তবে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা হবে।”
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুর বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতবর্ষে সিএএ আইন কার্যকর করা কেবল সময়ের অপেক্ষা।” এখন দেখার, গুজরাট নির্বাচনের পূর্বে সিএএ আইন নিয়ে বিজেপি নেতাদের মন্তব্য প্রকাশ কেবল নির্বাচনী কৌশল, নাকি খুব দ্রুত দেশে কার্যকর করা হতে চলেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।