বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের বুকে ফের একবার কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে। টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমূল পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর মাধ্যমে বলপূর্বক সই করানোর অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে বর্ধমানের (Burdwan) কাটোয়া (Katwa) এলাকায়।
সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক মামলায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। আর এর মাঝেই এবার পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝিকে বন্দুক দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন এবং পরবর্তীতে তাকে বলপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। গোটা ঘটনায় ভীত সন্ত্রস্ত উপপ্রধান থেকে পঞ্চায়েত প্রধানও।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান পার্বতী ঘোষ বলেন, “আমাদের পঞ্চায়েতে কয়েকজন সদস্য রয়েছে, যারা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে যে কোন টেন্ডারে কাটমানি তোলে। এক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কাটমানি তোলা হয়, আমার প্রাপ্য পাঁচ শতাংশ। এই কাজে জড়িত প্রদীপ চট্টরাজ নামে একজন সদস্য এবং এছাড়াও আরো অনেকে জড়িত রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “পঞ্চায়েতে যখন কোন কাজ হয়, তখন তা সম্পর্কে আমাকে অবগত করা হয় না। কোন টেন্ডার এলে প্রদীপ চট্টরাজ জোর করে সবাইকে সই করিয়ে নেয় এবং পরবর্তীতে কাটমানির টাকা খায় তারা।” ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতে ইতিমধ্যেই তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, যার মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই উপপ্রধান বলেন, “ওরা প্রথমে আমাকে সই করতে বলেছিল। আমি বলেছিলাম, সময় হলে ঠিক করে দেব। এরপর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পঞ্চায়েতের ৪২ লক্ষ টাকার কাজ নিয়ে মূলত বিবাদ শুরু হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় নাম ওঠে আব্দুল আজিম শেখের। ওই ব্যক্তিও পঞ্চায়েতের সদস্য বলেই জানা গিয়েছে। পরবর্তীতে প্রতিটি ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করার পাশাপাশি তার নেতৃত্বে দুষ্কৃতীদের দল পঞ্চায়েত উপপ্রধানকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “দলের ফোরামে সমস্ত অভিযোগ জানানো উচিত ছিল দোলন সাঁতরা মাঝির। তবে উনি যখন একজন মহিলা এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তখন তদন্ত করে দেখা হবে। যদি প্রদীপ চট্টরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অপরদিকে বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুল আজিম শেখ।