বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি (SSC Case) দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে অস্বস্তি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী যে দুর্নীতি মামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’, এই বিষয়ে অতীতে একাধিকবার দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। অভিযোগের সেই ধারা বজায় রেখে আদালতে ফের একবার সিবিআইয়ের (CBI) দাবি, “এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রধানত খুঁটি সাজানোর কাজ করতেন পার্থ।” এমনকি, এক্ষেত্রে সৎ ব্যক্তিদের জোর করে সরিয়ে নিজের পছন্দের লোকেদের পদে বসানোর অভিযোগ পার্থের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। এক্ষেত্রে প্রথমে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং বিপুল পরিমাণ সোনা গয়না মেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরবর্তীতে পার্থ-অর্পিতার নামে কোটি কোটি সম্পত্তির হদিস পায় তদন্তকারী অফিসাররা।
এক্ষেত্রে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গতকাল আদালতে জামিনের জন্য একাধিক বার আবেদন করা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। একইসঙ্গে বিতর্ক বাড়িয়ে সিবিআই তাদের চার্জশিটে দাবি করে, “স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় মাস্টারমাইন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে তাঁর কাছের লোক শান্তি প্রসাদ সিনহাকে এসএসসির পরামর্শদাতা পদে বসিয়েছিলেন পার্থ নিজেই।”
শুধু তাই নয়, প্রাক্তন চেয়ারপার্সন পদ থেকে শর্মিলা মিত্রকে সরিয়ে শান্তি প্রসাদকে নিয়ে আসেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। উদ্দেশ্য একটাই, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শান্তি প্রসাদ সিনহাকে দিয়ে নিজের ইচ্ছে মত দুর্নীতি করানো। সিবিআইয়ের অভিযোগ, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত সৌমিত্র সরকারকে উক্ত পদ থেকে সরাতে বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া শুরু করেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী। এক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করায় সৌমিত্রবাবুকে চাপ দেওয়া হয় বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মোট ৩৮১ জনের সুপারিশ পত্র তৈরি করেন শান্তি প্রসাদ সিনহা। পরবর্তীতে তা কল্যানময় গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হলেও এ দুর্নীতি সর্বপ্রথম নজরে আসে সৌমিত্র সরকারের। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে শান্তি প্রসাদকে শোকজ করা হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় রক্তচক্ষুর মুখে পড়তে হয় সৌমিত্রবাবুকে। এক্ষেত্রে শান্তি প্রসাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, বরং সৌমিত্র সরকারকে ডেকে সতর্ক করেন পার্থ।
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও সিবিএই তাদের চার্জশিটে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, অশোক সাহা এবং শান্তিপ্রসাদ সিনহাদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে। এখন দেখার, দুর্নীতি মামলায় পরবর্তী সময়ে আরো নয়া কোন তথ্য প্রকাশ্যে উঠে আসে।