টিকিট থাকতেও ট্রেনেই উঠতে পারলেন না ৬৭ যাত্রী, ১৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর বড় পদক্ষেপ নিল রেল

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতীয় রেল দাবি করে থাকে যত দিন যাচ্ছে, তাদের পরিষেবার মান ততই উন্নত হচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যা এই দাবির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলে। এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে গিয়ে পৌঁছল। নানা কারণে যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে না পারা একটি সাধারণ ব্যাপার। তবে সেক্ষেত্রে যাত্রীদের কোনও না কোনও দোষ থেকে থাকে। যদি একই জিনিস রেলের (Indian Railways) গাফিলতির জন্য হয়ে থাকে, সেটি একটি চাঞ্চল্যকর ব্যাপারই।

এমনই একটি ঘটনা ঘটল পূর্ব মধ্য রেলওয়ের অন্তর্গত দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন স্টেশনে। সেখানে ভিড়ের চাপে রিজার্ভেশন থাকা সত্ত্বেও ট্রেনেই উঠতে পারলেন না ৫০ জনেরও বেশি যাত্রী! ট্রেনে এতটাই ভিড় ছিল যে রিজার্ভেশন থাকা সত্ত্বেও সেই ট্রেনে উঠতেই পারলেন না তাঁরা। জানা গিয়েছে, এই যাত্রীরা দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন থেকে চেন্নাইগামী সংঘমিত্রা এক্সপ্রেসে উঠতেন। তবে অত্যধিক ভিড়ের চাপে তা করতে পারেননি। 

এই ঘটনার ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় দীন দয়াল উপাধ্যায় স্টেশন চত্বরে। যাত্রীরা সেখানে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে আটকে থাকেন। ঘটনার বিস্তারিত জানার পর আরপিএফ ও জিআরপি-র তরফ থেকে তাঁদের খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৫ ঘণ্টা বাদে অন্য একটি ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীদের চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করানো হয়। 

জানা গিয়েছে, ১২০ জনের একটি দল চেন্নাইয়ের তিরুমালাই থেকে কাশী ভ্রমণে এসেছিল। কাশী ঘোরার পর ১২ নভেম্বর রাত ১১টার সংঘমিত্রা এক্সপ্রেসে করে চেন্নাই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল দলটির। সেই মতো দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন দলের সদস্যরা। চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে সংঘমিত্রা এক্সপ্রেস আসার পর দেখা যায়, সংরক্ষিত কামরাগুলিতেও ব্যাপক ভিড় ছিল এবং বেশ কিছু কামরার দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল।

Indian Railways Train

দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনে ওই দলের সদস্যরা এস ১, এস ২, এস ৩, এস ৭ এবং এস ৯ কামরায় ওঠেন। কিন্তু সেখানেও সেই সময়ে ব্যাপক ভিড় ছিল। এমনকী, দরজার কাছেও মানুষ বসে ছিল। ওই দলের ৫৩ জন সদস্য কোনও ভাবে ট্রেনে উঠতে পারলেও বাকি ৬৭ জন উঠতে পারেননি। ফলে তাঁরা স্টেশনেই থেকে যান। সারা রাত প্ল্যাটফর্মে থাকার পর সকালে আরপিএফ আধিকারিকরা আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন।

এরপর আটকে পড়া যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেই সময় রেলের তরফে তাঁদের টিকিটগুলিকে বৈধতা দেওয়া হয়। এরপর দুপুরের ট্রেনে তাঁদের ইতারসি পাঠানো হয়। সেখান থেকে অন্য একটি ট্রেনে তাঁদের চেন্নাই পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনার বিষয়ে দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশনের আরপিএফ ইন-চার্জ ইনস্পেকটর সঞ্জীব কুমার জানান, সংঘমিত্রা এক্সপ্রেসে ব্যাপক ভিড় থাকার ফলে একাধিক যাত্রী তাতে উঠতে পারেননি। এই ঘটনা সামনে আসার পর তাঁদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়।

যাত্রীরা দীনদয়াল স্টেশনে ১৫ ঘণ্টা আটকে পড়ায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। যদিও তারপর অন্য ট্রেনে তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, সংরক্ষিত কামরা হওয়া সত্ত্বেও তাতে অত ভিড় কেন হল? দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন স্টেশনে পৌঁছনোর আগে ওই কামরাগুলি থেকে অসংরক্ষিত টিকিটে সফর করা যাত্রীদের কেন নামিয়ে দেওয়া হল না? এ নিয়ে এখনও রেলের কাছ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর