বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: হারের ধাক্কা কাটিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ ফলে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেল ব্রাজিল। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রথম একাদশে যে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা খেলছেন, তাদেরকে কিছুটা বিশ্রাম দিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ টিটে। ব্রাজিল সেইদিন খারাপ খেলেছিল এমন নয়। কিন্তু গোলমুখ খোলেনি, আর গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে সুইজারল্যান্ড এবং সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যতটা দাপট দেখিয়েছিল, ততটা দাপট আফ্রিকার দলটির বিরুদ্ধে তুলে ধরতে পারেননি সেদিন ফ্রেডরা। তারমধ্যে শেষ মিনিটে গোল করে ক্যামেরুন অধিনায়ক আবুবাখেরের অনন্য উদযাপন।
আগের ম্যাচে ব্রাজিলের এমন হার এবং পর্তুগালের মত দলের বিরুদ্ধে তাদের জয় দেখেই দক্ষিণ কোরিয়ার পর্তুগিজ কোচ পাওলো বেন্টো হয়তো বেশি সাহসী হয়ে উঠেছিলেন। তাই আজ নেইমারদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী ফুটবল খেলাতে গিয়েছিলেন সনদের। ফলে মাঝমাঠ ও ডিফেন্সে তৈরি হলো ফাঁকা জায়গা। ঐটুকই প্রয়োজন ছিল টিটের দলের। বেন্টো যখন নিজের ভুল বুঝতে পারলেন তখন সনরা ৪-০ ফলে পিছিয়ে পড়েছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে সান্ত্বনা স্বরূপ দুরপাল্লার শটে দুরন্ত গোল করলেন বটে সিউন হো পেইক, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হলো না। প্রথমে জাপান এবং তারপর দক্ষিণ কোরিয়া, সোমবার রাতেই কাতার বিশ্বকাপ থেকে এশিয়ার সম্পূর্ণরূপে বিদায় ঘটে গেল। সনরা বেশ কয়েকবার গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছেছিলেন, কিন্তু কখনও গোলরক্ষক অ্যালিসন আবার কখনও ব্রাজিলিয়ান অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারদের দুর্দান্ত ডিফেন্ডিংয়ে হার মানতে বাধ্য হলো কোরিয়ান আক্রমণভাগ।
ব্রাজিলের আক্রমণভাগের ব্যাপারে আলাদা করে শব্দ খরচ করার খুব বেশি প্রয়োজন নেই। এটুকু বলা যায় যে রাফিনহা ফিনিশিংয়ের যে সমস্যায় ভুগছেন সেটা যদি আজকের ম্যাচে দূর হয়ে যেত তাহলে আরো অনেক বড় ব্যবধানে জিততে পারতো ব্রাজিল। রিয়েল মাদ্রিদের হয়ে কত এক বছরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা অপিনিসিয়াল জুনিয়র আজ বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি পেলেন নেইমারের পাস থেকে। তারপর রিচার্লিসনের আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল করে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি করেছিলেন নেইমার।
এরপর থিয়াগো সিলভার সঙ্গে অসাধারণ কম্বিনেশন প্লে করে ব্যক্তিগত দক্ষতার দুর্দান্ত পরিচয় দিয়ে দলের তৃতীয় গোলটি করেছিলেন রিচার্লিসন। লেফট উইং থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের স্কুপ ধরে যখন লুকাস পাকুয়েতা ৪-০ করে দিয়েছিলেন, তখন ম্যাচের বয়স মাত্র ৩৬ মিনিট। এরপর আরও গোল করার চেষ্টা করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা, কিন্তু তারা লক্ষ্যে সফল হননি। তবে আজকের এই বড় ব্যবধানে জয়ের কারণে আত্মতুষ্টি আসলে বলতে হবে নেইমারদের। দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে যে বড় ভুলটা করেছে সেই ভুল ক্রোয়েশিয়া এবং পরবর্তীকালে অন্যান্য প্রতিপক্ষরা করবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। তাই যথেষ্ট সতর্ক হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে নামতে হবে সাম্বা ব্রিগেডকে। সেই সঙ্গে ম্যাচের শেষে কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে গোটা ব্রাজিলিয়ান দল অসুস্থ তারকাকে বার্তা দেয় যে এই কঠিন সময়ে মানসিকভাবে তার সঙ্গেই রয়েছেন সকলে।