বহু ইতিহাসের সাক্ষী, গোটা ভারতে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের এই স্টেশনেই আছে সাড়ে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গোবরডাঙা পূর্ব রেলের অন্যতম পুরনো একটি স্টেশন। ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড কার্জন এই স্টেশনটি নির্মাণ করেন। শিয়ালদা-বনগাঁ শাখার অন্যতম প্রাচীন এই স্টেশনটি ব্রিটিশ আমল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে আসছে। বর্তমানে এই স্টেশনে গেলে তিন নম্বর প্লাটফর্মের বাঁ দিকে একটি ছোট্ট প্লাটফর্ম লক্ষ্য করা যায়। প্রাচীন এই জনপদের জমিদারদের স্মৃতি বহন করে আসছে এই ছোট্ট প্লাটফর্মটি। লোকমুখে এই ছোট প্লাটফর্মটি ‘সাড়ে তিন নম্বর’ প্লাটফর্ম বলেই পরিচিত।

গোবরডাঙার জমিদারদের গোটা বঙ্গদেশ জুড়ে প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, জমিদারদের খুশি করতে বহু আগেই ব্রিটিশ সরকার এই জায়গায় রেললাইন স্থাপন করে। শিয়ালদা থেকে সেই রেল লাইন চলে গিয়েছিল বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা পর্যন্ত। অন্যদিকে, গোবরডাঙার জমিদারদের লেঠেল বাহিনীরও নামডাক ছিল খুব।

এর পাশাপাশি, এখানকার জমিদারদের হাতিরও শখ ছিল। জমিদারদের হাতিশালায় দেশ-বিদেশের হাতি রাখা থাকত। সেইসব পিলখানার অস্তিত্ব গোবরডাঙার পুরনো রাজবাড়ির পাশে এখনও দেখা যায়। একটা সময় ঢাকার নবাবের কানে পৌঁছায় গোবরডাঙার জমিদারদের হাতির শখের কথা। সেই কথা শুনে ঢাকার নবাব চেয়ে পাঠান বেশ কয়েকটি ভালো মানের হাতি।

Gobardanga

গোবরডাঙার জমিদার মশাই এই নির্দেশের পর পড়ে গেলেন সমস্যায়। কোনও সমাধান না করতে পেরে তিনি শরণাপন্ন হলেন ব্রিটিশ সরকারের। সেই সময় বাংলাদেশের খুলনা পর্যন্ত দমদম থেকে বনগাঁ হয়ে নিয়মিত রেল চলাচল করত। জমিদারের মান বাঁচাতে ব্রিটিশ সরকার তৎপর হয়ে ওঠে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় রেলগাড়ি করে হাতি পাঠানো হবে নবাবের কাছে।

IndianElephant

এরপর হাতিকে ট্রেনে তোলার জন্য গোবরডাঙা স্টেশনে একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম বানানো হয়। সেই প্লাটফর্মটি ‘এলিফ্যান্ট প্লাটফর্ম’ নামেও পরিচিত। পরবর্তী সময়ে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতেন জমিদার বাড়ির লোকেরা। আজ জমিদারিও নেই, ব্রিটিশ শাসনও নেই। কিন্তু অতীতের ইতিহাস সঙ্গী করে আজও অবহেলায় পড়ে রয়েছে গোবরডাঙার সাড়ে তিন নম্বর প্লাটফর্ম।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর