বাংলাহান্ট ডেস্ক: শিয়রে সংক্রান্তি ধেয়ে আসছে দেশের অর্থনীতির উপর! এমন ইঙ্গিতই দিলেন রঘুরাম রাজন। তিনি সতর্ক করলেন, আগামী বছর দেশের অর্থনীতি (Economic slowdownIndia) একটি খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে চলেছে। বুধবার প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর যোগ দিয়েছেন রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য়। সেখান থেকেই এই মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।
‘বিশ্বে ইতিমধ্যেই আর্থিক মন্দা দেখা দিয়েছে। এর একটি কারণ হিসেবে যেমন উঠে আসছে করোনা অতিমারির নাম। তেমনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেরও একটি প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতির উপর। এর সরাসরি প্রভাব ভারতেও পড়তে চলেছে বলে মত রঘুরাম রাজনের। তিনি জানিয়েছেন, ভারত এই সময়ের মধ্যে উপযুক্ত অর্থনৈতিক সংস্কার করেনি। তাই এর ফল ভোগ করতে হবে দেশের সাধারণ মানুষকে।
তিনি আরও জানান, নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির কথা মাথায় রেখে নতুন নীতি তৈরি করতে হবে। রাজন মনে করিয়ে দেন, করোনা অতিমারির সময় এই সমাজের এই শ্রেণির উপরেই সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়েছিল। মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ বাড়ি থেকে কাজ করতে পারলেও বন্ধ ছিল সমস্ত কারখানা। ফলে কাজ হারিয়েছেন লক্ষাধিক শ্রমিক বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।
রঘুরাম রাজন সরকারকে ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার কথাও বলেছেন। পাশাপাশি, টেকসই শক্তির ক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লবও বাস্তবায়িত করার কথা বলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথোপকথনে পরিষেবা খাতে পরবর্তী বিপ্লবের সম্ভাবনা তুলে ধরেন তিনি। রঘুরাম রাজন বলেন, “অতিমারির সময় উচ্চবিত্তদের তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। নিম্নবিত্তরাও সরকারি সাহায্য পেয়েছিলেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছিলেন নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।”
অতিমারির সময় দেশে বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছে বলে মত প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের। সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে এই শ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করে নীতি নির্মাণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। পরিষেবা খাতে বিপ্লবের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এখান থেকে বসে আমেরিকার হয়ে কাজ করতে পারি। যেমন চিকিৎসকরা প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারতে বসেই আমেরিকায় রোগী দেখতে পারেন।”
এ ক্ষেত্রে তাঁরা বিপুল অঙ্কে বিদেশি মুদ্রায় আয় করবেন বলে জানিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। ভারতের পরিষেবা খাতই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও বর্তমানে ভারতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তিই মনে করেন, নতুন ধরনের সবুজ বিপ্লব আসতে চলেছে। এই খাতে আরও জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
ভারতকে আরও বেশি করে উইন্ডমিল নির্মাণ করতে হবে। আবাসনের সবুজায়নের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন রঘুরাম রাজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি। তাই পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদন বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভারতের বর্তমান অর্থনীতির যা হাল, তাতে আগামী বছরও বৃদ্ধি অনেকটাই ধীরগতিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর।