বাংলাহান্ট ডেস্ক: গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, উত্তর কলকাতার এক এঁদো গলি থেকে মুম্বইয়ে স্বপ্নের টানে ছুটে আসা ছেলেটা যে কখন ভারতখ্যাত মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) হয়ে উঠলেন তা জানতেই পারেননি অনেকে। নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মায়ানগরীতে এসে পদে পদে হোঁচট খেতে হয়েছিল মিঠুনকে। এমনকি বহু পরিশ্রমের পর নিজেকে প্রমাণ করেও অপমানিত হয়েছেন তিনি।
মিঠুন নিজেই জানিয়েছিলেন, মুম্বই গিয়ে অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। এক বেলার খাবার জুটলে তার পরের বেলা জুটত না। কলের জল খেয়েও পেট ভরিয়েছেন তিনি। এমনকি এবার মেরিন ড্রাইভে শুয়ে থাকা মিঠুনকে গ্রেফতারও করে নিয়ে গিয়ে গিয়েছিল পুলিস।
কিন্তু এই মিঠুনই ১৯৭৬ এ প্রথম ছবি ‘মৃগয়া’র জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়ে চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। আশা জেগেছিল অভিনেতারও, এবার বোধকরি সুখের সময় আসতে চলেছে। কিন্তু তখনো তাঁর পরীক্ষা বাকি ছিল। পরিচালকের দোরে দোরে ঘুরে নিজের পোর্টফোলিও জমা দিতেন মিঠুন। একদিন এমনি এক পরিচালকের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন জিতেন্দ্রও। তিনি তখন ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির অভিনেতা। সেদিন মিঠুনের সামনেই তাঁর গায়ের রঙ নিয়ে কটাক্ষ করে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘এই কালো ছেলেটা যদি কোনোদিন নায়ক হয়ে যায় তাহলে আমি মুম্বই ছেড়ে দেব।’
শুধু জিতেন্দ্র নন, অভিনেতা প্রযোজক ফিরোজ গান, পরিচালক মনমোহন দেশাইও চরম অপমান করেছিলেন মিঠুনকে। কেউ বলেছিলেন, নায়ক তো দূরের কথা, খলনায়ক হওয়ারও যোগ্য নন মিঠুন। আবার কেউ মাত্র ১০ টাকা হাতে দিয়ে অপমান করেছিলেন।
না, হার মানেননি কলকাতার ছেলে। সেই মিঠুনই যখন ‘ডিস্কো ডান্সার’ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ান, বিদেশে ছড়ায় খ্যাতি, একের পর এক অ্যাওয়ার্ড পোরেন ঝুলিতে, এই নিন্দুকরাই মুখ লুকানোর জায়গা পাননি। মিঠুন শুধু নায়ক নন, সুপারস্টার হয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু জিতেন্দ্র মুম্বই ছাড়তে পারেননি।