বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষ হওয়ার পর তিনটে দিন কেটে গিয়েছে। বিজয়ী দেশ আর্জেন্টিনার মানুষজন সাদরে তাদের ফুটবলারদের বরণ করে নিয়েছেন দেশে ফেরার পর। ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে টাইব্রেকারে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। গোল করেছিলেন মেসি, দি মারিয়ারা। তেকাঠির নিচে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজ।
ফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন তাদের তরুণ তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পেও। নির্ধারিত সময়ে দুটি এবং অতিরিক্ত সময়ে ১ গোল করে তিনি ফ্রান্সকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি টাইব্রেকারেও গোল করতে ভুল করেননি। কিন্তু তার লড়াইকে গোটা ফ্রান্স দল যোগ্য মর্যাদা দিতে পারেনি।
বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও নিজের দেশকে জেতাতে না পারার দুঃখ ছিল এমবাপ্পের মনে। তাই মাঠে বসে তিনি যখন করুণ ভাবে চোখের জল সামলাচ্ছিলেন তখন তার দেশের প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজও এগিয়ে গিয়ে তাকে সান্তনা দেন। কিন্তু আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের এই ভালো মানুষের মুখোশটা খসে পড়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের আনন্দ উদযাপনের সময়।
ড্রেসিংরুমে আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা একই লাইনে রেলগাড়ির মত ভঙ্গিতে ঘুরে ঘুরে সেলিব্রেশন করার সময় এমিলিয়ানো মার্টিনেজ তাদের নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি ওই আনন্দ উদযাপনের মাঝে বলে উঠছিলেন “এমবাপ্পে শেষ হয়ে গেছে”। এরপর যখন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা দেশে পৌঁছে হুড খোলা বাসে গোটা রাজধানীতে ভক্তদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের সঙ্গে ট্রফি জয়ের আনন্দ উদযাপন করেন তখন এমবাপ্পের মুখোশ পরানো একটি পুতুলকে নিয়েও ফ্রেন্চ তরুণকে চরম বিদ্রুপ করেন এমি। এমনকি কিংবদন্তি লিও মেসিও সেই সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটি অত্যন্ত উপভোগ করছিলেন।
এখন প্রশ্ন হল আচমকাই কেন কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করছেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। আজ থেকে কয়েক মাস আগে কিলিয়ান এমবাপ্পে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, “ইউরোপে প্রতিযোগিতার মান অনেক উন্নত। এখানে নিয়মিত বিশ্বের প্রথম সারির দলগুলির মধ্যে ম্যাচ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু লাতিন আমেরিকায় প্রতিযোগিতা বলতে শুধুমাত্র ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ ছাড়া এই দুটি দেশ কখনোই মারাত্মক কোনও প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় না। তাই বিশ্বকাপে যখন ইউরোপের দলগুলি খেলতে নামে তখন তারা ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার চেয়ে এগিয়ে থাকে।” আমরা যদি গত তিন বারের বিশ্বজয়ীদের দিকে তাকাই তাহলে এমবাপ্পের কথা খুব একটা ভুল বলে মনেও হবে না। আর্জেন্টিনা যদিও বিশ্বকাপ জিতে ইউরোপের দাপটের অবসান ঘটিয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনালে যে ফুটবলারের কাছ থেকে চার গোল হজম করতে হয়েছে তাকেই একজন গোলরক্ষক এভাবে কি ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতে পারেন? এই নিয়ে বিতর্কটা হয়তো থেকেই যাবে।