বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশ হল একটি কৃষিনির্ভর দেশ। পাশাপাশি, দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ কৃষিকার্যের মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এমতাবস্থায়, কৃষকদের আয় বাড়ানোর চেষ্টায় প্রায়শই একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয় সরকারের তরফে। সেই রেশ বজায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার এবার ক্যাকটাস চাষের (Cactus Farming) মাধ্যমে কৃষকদের আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি, সরকারের উদ্দেশ্য হল অনুর্বর ও তুলনামূলক কম উর্বর জমিতে ক্যাকটাস চাষ করা।
এছাড়াও, সরকার জৈব জ্বালানি (Bio-Fuel) ও জৈব সার উৎপাদনে (Bio-Fertiliser) ক্যাকটাসের বাণিজ্যিক ব্যবহারের সম্ভাবনা অন্বেষণের কাজও শুরু করেছে। মূলত, এর ফলে দ্বিগুণ সুবিধা হবে। প্রথমত, ক্যাকটাসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা ভালো টাকা পাবেন। দ্বিতীয়ত, জৈব জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে সরকারকে অপরিশোধিত তেল আমদানিতে কম খরচ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং “ক্যাকটাস রোপণ এবং এর অর্থনৈতিক ব্যবহার”-এর বিষয়ে একটি বৈঠক করেছেন। চিলি, মেক্সিকো, ব্রাজিল, মরক্কো, টিউনিসিয়া, ইতালি, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে অংশ নেন। এই প্রসঙ্গে গিরিরাজ সিং জানিয়েছেন যে, জৈব জ্বালানি, খাদ্য এবং জৈব সারের ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের সুবিধাগুলি উপলব্ধি করতে, অনুর্বর জমিতে ক্যাকটাস রোপণের জন্য বিভিন্ন বিকল্প অনুসন্ধান করা উচিত।
জৈব জ্বালানি উৎপাদনের জন্য পাইলট প্রকল্প শুরু হবে: এদিকে, ভারতে এখন ক্যাকটাসের বাণিজ্যিক ব্যবহারের দিকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ, আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় মধ্যপ্রদেশের শুষ্ক ভূমিযুক্ত এলাকায় ক্যাকটাস এবং অন্যান্য কিছু উদ্ভিদ থেকে জৈব জ্বালানি উৎপাদনের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প শুরু করতে চলেছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এই উদ্যোগে প্রযুক্তিগত সহায়তা করবে।
ক্যাকটাস ২০ টি দেশে চাষ করা হয়: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বিশ্বের অন্তত ২০ টি দেশে বাণিজ্যিক ফসল হিসাবে ক্যাকটাসের চাষ করা হয়। মূলত, এই চাষের জন্য খুব কম জলের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি, এটি একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এমতাবস্থায়, এটি শুধুমাত্র জৈব জ্বালানি কিংবা জৈব সার তৈরিতেই ব্যবহৃত হয় না! এছাড়াও, এটি পশু খাদ্য হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
মেক্সিকোতে কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে ক্যাকটাস: মেক্সিকোতে ক্যাকটাস চাষ কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। মেক্সিকোর মরুভূমিতে নোপাল ক্যাকটাস (Nopal Cactus) নামের একটি উদ্ভিদ জন্মায়। যাকে বলা হয় “সবুজ সোনা”। এটি স্যালাড হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি সেটি থেকে চিপস ও শেকও তৈরি করা হয়। এছাড়াও, এই ক্যাকটাসের বর্জ্য থেকেও ব্যাপক হারে জৈব জ্বালানি তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ভুট্টার তুলনায় ক্যাকটাস থেকে জৈব জ্বালানি তৈরি করা অনেকটাই সস্তা হয়।