শেষ ১৩ বছরের লড়াই! ক্যান্সারের কাছে অবশেষে হার স্বীকার করল কিষাণ! শোকাহত গোটা চিড়িয়াখানা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : আগে জঙ্গলেই ঘুরে বেড়াতো সে। তারপর হঠাৎই হয়ে ওঠে মানুষখেকো। যখন তখন হাজির হতে শুরু করে লোকালয়ে। তার উৎপাতে জেরবার মানুষ। অগত্যা ধরে এনে চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি করে ফেলা হয় কিষাণকে (Tiger Kishan Dies)। কিন্তু শুধু লোহার খাঁচাই নয়, মারণ রোগও কাবু করে ফেলেছিল এই পুরুষ বাঘটিকে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল সে (Lucknow Zoo)।

কিষাণপুর টাইগার রিজার্ভ একসময় স্বাধীন ঠিকানা ছিল কিষাণের। কিন্তু আচমকা লোকালয়ে তার অত্যাচার বেড়ে যায়। দুধওয়া জাতীয় উদ্যানের আশাপাশের এলাকা গুলিতে হামলা চালায় সে। ২০০৮ সালে জাল পাতা হলেও, ২০০৯ সালের ১ মার্চ ধরা দেয় কিষাণ। তাকে এনে রাখা হয় লখনউ চিড়িয়াখানায়।

   

kishan
প্রাথমিক ভাবে কিষাণের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। তাতে দেখা যায়, কিষাণের হেমাঞ্জিওসারকোমা বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার রয়েছে। তা ইতিমধ্যেই তার কান এবং মুখেও ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা সেই সময় জানান, রোগের কারণেই শিকার করার ক্ষমতা হারিয়েছে কিষাণ। বন্য প্রাণীদের পিছনে ছুটে বেড়ানোর ক্ষমতা নেই তার। তাতেই নরখাদক হয়ে উঠেছে সে।

এর পর চিড়িয়াখানাতেই কিষাণের চিকিৎসা শুরু হয়। সারা ক্ষণ তার দেখভাল করতেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। ভিতরে ভিতরে রোগ কুরে খাচ্ছিল তাকে। বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যেত না বটে, কিন্তু ক্রমেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছিল সে। তার পরও দীর্ঘ ১৩ বছর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে যায়।  মৃত্যুর আগে কিষাণ ভালো করে খেতেও পারত না বলে জানান চিড়িয়াখানার কর্মীরা। জানা যায়, এমন দিনও গিয়েছে মুখে একটা দানাও তোলেনি সে। সারাদিন বসে থেকেছে একই জায়গায়। অবশেষে শুক্রবার সকালে মারা যায় সে।

চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ভিকে মিশ্র জানান, ‘কিষাণের মৃত্যুতে চিড়িয়াখানার কর্মীরা খুব কষ্ট পেয়েছেন। অত্যন্ত সমাদরে তাকে সমাধিস্থ করেন সকলে মিলে। কিষাণের চলে যাওয়ায় যেমন মন খারাপ সকলের, তেমনই চিড়িয়াখানার বাঘিনী কাজরীকে নিয়েও উদ্বিগ্ন সকলে। বয়স হয়েছে কাজরীর। খাবার খেলেও নড়াচড়া কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ঠান্ডায় তার জন্য হিটারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ad2
Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর