বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই প্রকাশ্যে আসছে তৃণমূলের (Trinamool Congress) গোষ্ঠীকোন্দল। এবার ফের একবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠে এল খাস কলকাতা (Kolkata) থেকে। সোমবার দলেরই দুই পক্ষের ঝামেলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেলেঘাটা (Beleghata) এলাকা। জানা গেছে, বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে এদিন রাত ৯টা নাগাদ শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় বচসা । মুহূর্তে তা রূপ নেয় হাতাহাতির। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
কী জানা যাচ্ছে? এদিন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সাক্ষী থাকল বেলেঘাটাবাসী। শুধু তর্কাতর্কি নয়, প্রবল দ্বন্দ্বের জেরে মাথা ফাটল দলেরই দুই কর্মীর। তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) পরেশ পাল ঘনিষ্ঠ হিসাবে এলাকায় পরিচিত রাজু নস্কর। অভিযোগ, তাঁর অনুগামীদের সঙ্গেই এদিন ঝামেলায় জড়ায় তৃণমূল কাউন্সিলর জীবন সাহা ঘনিষ্ঠ শঙ্কর চক্রবর্তীর লোকজন। তবে ঘটনার পরও এদিন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিঁনি জানান, ‘এক পক্ষ মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীর কোনও ব্যাপারই নেই।’
এদিনের ঘটনায় সোমবার রাতে রাজু নস্করের দুই অনুগামী শুকদেব দাস ও প্রদীপ দাসকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় এনআরএস হাসপাতালে। এই বিষয়ে রাজু নস্কর বলেন, “আমাদের এক কর্মী প্রদীপ দাসকে শঙ্কর চক্রবর্তীর ছেলেরা মেরেছে। এরা এক সময় সিপিএমের ছিল। বিধানসভা, পুরসভা ভোটে এদের কেউ দেখেনি। এখন হঠাৎ করে এসে প্রদীপ দাসকে মারধর করল। শুকদেব দাস প্রতিবাদ করায় ওকেও ফেলে মেরেছে। বন্দুকের বাট দিয়ে মেরেছে। শুকদেব আইএনটিটিইউসির নেতা। আমরা এক প্রতিকার চাই।”
অন্যদিকে, ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর (TMC Councilor) অলকানন্দা দাস বলেন, “আমি শুনলাম দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। মদ্যপ লোকজন ঝামেলা করছে। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। পুলিশ যা করার করুক। যেখানে ঝামেলা হচ্ছে, পুলিশ ধরুক, বেদম মেরে জেলে ঢুকিয়ে দিক। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখানে নেই। মদ পেটে পড়ে গেলে দেয়ার ইজ নো গোষ্ঠী। অনলি মদের গোষ্ঠী ওটা। এখানে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কী হয়েছে আমি এখনও জানি না। তবে এক পক্ষ মদ খেয়ে ছিল আমি নিশ্চিত। পুলিশ দেখুক।”
আহত অনুগামী শুকদেব দাসের অভিযোগ, “আমরা ক্লাব সমন্বয়ের কাছে ক্যারাম খেলছিলাম। প্রদীপ ফোন করে বলে, দাদা আমাকে এখানে খুব মারধর করছে। শুনে দৌড়ে যাই। গিয়ে দেখি, ওদের হাতে অস্ত্র, পাঞ্চার, লোহার রড। আমি ছাড়াতে গেলে আমাকেও বেধড়ক মারে। মাথা ফেটে যায়। ২০২১ পর্যন্ত পরেশ পালের সঙ্গে ছিলেন না। ভোটের কোনও কাজই করেনি। অলকানন্দ দাসের ভোটেও ছিল না। আসলে এরা সুবিধাবাদী। এরা কোনও পার্টির লোক না। আমি আমার নেতা, নেত্রীদের কাছে অনুরোধ করব প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টা দেখুন।”