বাংলা হান্ট ডেস্ক : হিজাব বিরোধী আন্দোলনকে (Anti Hijab Protest) দমন করতে এবার আরও কড়া ইরান। এবার দুই কিশোরকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ তেহরান (Tehran)। সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানায় দুই কিশোর। কিন্তু সে আবেদন খারিজ করে দিল উচ্চ আদালত। জানা যাচ্ছে, ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ ও ‘পৃথিবীর বুকে দুর্নীতি’- এই দুই অপরাধে তাদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ বহাল রাখা হয়েছে।এই আদেশ কার্যকর হলে, হিজাব বিরোধী আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে দুই কিশোরকে। ইতিমধ্যেই আন্দোলনে অংশগ্রহণের শাস্তি হিসাবে একাধিক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ইরানের (Iran) প্রশাসন।
সূত্রে খবর, ১৮ বছর বয়সি মেহদি মহম্মদিফার্দ ও ১৯ বছরের কিশোর মহম্মদ বরোউনি- এই দু’জন হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নেয়। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জলের বোতলে পেট্রল ভরে বিস্ফোরক মলোটোভ ককটেল বানাচ্ছিল দু’জন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও এই মলোটোভ ব্যবহার করা হয়। ইরানের আইন বিভাগের বিশেষ ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, এই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মেহদি। সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে বয়সের কারণে তার সামনে এখনও দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারবে তারা।
মেহদির একটা শেষ সুযোগ থাকলেও, প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবে না মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পাওয়া মহম্মদ বরোউনি। অ্যামনেস্টি ইন্ট্যারন্যাশনালের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করা হয়। সাধারণ মানুষও একই দাবিতে সোচ্চার হয়। কিন্ত নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়। খুব তাড়াতাড়িই মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হবে মহম্মদকে। এর আগে ২৩ বছর বয়সি দুই তরুণকে ফাঁসি দিয়েছে ইরানের প্রশাসন। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সেদেশের আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ইরান। হিজাব না পরার কারণে পুলিসি হেফাজতে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই হিজাব বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হন সাধারণ মানুষ। পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আম জনতা। হিজাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হন সেদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। প্রতিবাদীদের থামাতে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে খোমেইনির প্রশাসন। কারাদণ্ড দেওয়া হয় অস্কার পাওয়া অভিনেত্রীকেও। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে একাধিক প্রতিবাদীকে দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে আর এক কিশোরের নাম।