দেগঙ্গায় গুপ্তধন! মৌর্য যুগের জিনিসে ঠাসা বাড়ির ৩টি ঘর, দরজা খুলতেই চোখ ছানাবড়া পুলিশের

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বারাসতের দেগঙ্গার একটি বাড়ি থেকে একাধিক দুষ্প্রাপ্য ঐতিহাসিক জিনিস উদ্ধার হল। সেই জিনিসগুলির বয়স ও মূল্য শুনে চমকে উঠেছেন বিশেষজ্ঞরাও। একেবারে কুষাণ সাম্রাজ্য থেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের (Maurya Dynasty) জিনিসপত্র উদ্ধার হয়েছে দেগঙ্গার ওই বাড়ি থেকে। জানা গিয়েছে, ওই জিনিসের মূল্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি। এমন প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

কিন্তু কী ভাবে উদ্ধার হল এত বিপুল পরিমাণ জিনিস? কার বাড়িতেই বা রাখা ছিল এগুলি? জানা গিয়েছে, দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপার চন্দ্রকেতুগড় এলাকা থেকে ওই জিনিস উদ্ধার হয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডের তরফে নতুন মিউজিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। তখন থেকেই প্রত্নতাত্ত্বিক দুষ্প্রাপ্য জিনিসের খোঁজ করছিলেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল তথা অফিসিয়াল ট্রাস্টি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল বিপ্লব রায়। ওই সময় তিনি বেড়াচাঁপার চন্দ্রকেতুগড়েও খোঁজ শুরু করেন। 

historic thing

সেই সময়েই তিনি জানতে পারেন, হাদিপুরের বাসিন্দা আসাদুজ্জামানের কাছে বিপুল পরিমাণ দুষ্প্রাপ্য প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস রয়েছ। খোঁজ পেতেই ওই জিনিস উদ্ধার করতে তৎপর হন বিপ্লববাবু। সেই সূত্রে আসাদুজ্জামানের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে থাকেন তিনি ও তাঁর দল। এরপর শুক্রবার বিপ্লববাবু আসাদুজ্জামানকে ফোন করেন। তিনি নিজেকে দিল্লির বাসিন্দা বলে পরিচাওয় দেন। একইসঙ্গে এও বলেন যে তিনি দুষ্প্রাপ্য জিনিস সংগ্রহ করেন।

গঙ্গাসাগরের জন্য কলকাতা আসায় আসাদুজ্জামানের থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রাচীন জিনিস কিনতে চান। এতে রাজি হয় আসাদুজ্জামান। সেই মতো এ দিন দুপুরে তার বাড়িতে যান বিপ্লববাবু। আসাদুজ্জামানের দোতলার তিনটি ঘরে ওই জিনিসগুলি রাখা ছিল। বিপ্লববাবু আসাদুজ্জামানের গোডাউনে মজুত থাকা সব জিনিস দেখতে শুরু করেন। তারপরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। এরপর জিনিসগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়। 

historic things

এ বিষয়ে বিপ্লব রায় বলেন, “আসাদুজ্জামানের কাছে ১৫ হাজারেরও বেশি দুষ্প্রাপ্য জিনিস ছিল। এগুলি চন্দ্রকেতুগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ১৫টি জিনিসের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ বেঙ্গলি সার্টিফিকেট রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই জিনিসের মূল্য ১০০ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। সার্টিফিকেট থাকা জিনিসগুলি বাদে বাকিগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কারণ এগুলি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। এগুলির সঙ্গে আমাদের দেশের ইতিহাস জড়িয়ে আছে।” 

সেই কারণে এগুলি সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছেন বিপ্লববাবু। যদিও আসাদুজ্জান স্বেচ্ছায় সব জিনিস হস্তান্তর করেছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনওরকম মামলা রুজু করা হয়নি। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি তারা এও জানিয়েছে, ট্রাস্টির মিউজিয়ামে আসাদুজ্জামানের নামে একটি সংগ্রহশালা করা হতে পারে। 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর