বাংলাহান্ট ডেস্ক : মাঝে মধ্যেই শোনা যায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী মৃত্যুর (Patient Death) খবর। আবার ঠিকঠাক বেড না পেলে বা রোগী ভর্তি না হতে পারলে মৃত্যু হয় রোগীর। এরম ঘটনা তো আকছার ঘটে আসছে। আর অন্য কোনো হাসপাতাল থেকে যদি সেই রোগী ‘রেফার’ (Reffer) করা হয়ে থাকে, তাহলে তো আরোই সমস্যা। এইভাবেই এক ২৬ বছরের রোগীর মৃত্যু হলো। মৃতের নাম মেঘনাদ চন্দ্র।
পরিবার সূত্রে জানানো হয় যে, তাঁরা মেঘনাদকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতালে ঘুরছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোথাও ভর্তি না হতে পারায় শেষ পর্যন্ত ভোরবেলায় এনআরএস (NRS) হাসপাতালে তিনি তাঁর শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। এমনও না যে তিনি কোনো গ্রাম থেকে এসে ভর্তি হচ্ছিলেন, তিনি খোদ টালিগঞ্জের (Tollygunge) বাসিন্দা। আর তাঁর সাথেও হয়ে গেলো এই মর্মান্তিক ঘটনা। তাঁর পরিবারের লোক চিকিৎসা (Treatment) ক্ষেত্রে অসাবধানতা এবং গুরুত্বহীনতার দাবী তুলেছে।
কিন্তু কী জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছিলেন ওই যুবক? তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তিনি ফুটবল খেলতেন। হঠাৎ করেই কদিন আগে এইভাবে তাঁর কুঁচকিতে ফুটবলের বাড়ি লাগে, আবার কদিন আগেই তিনি বাইক থেকে পড়ে গিয়ে ওই একই জায়গাতেই আঘাত পান। এরপর থেকেই চরম যন্ত্রনার শুরু হয়। বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন।
এরপর সন্ধ্যে থেকে তাঁরা মেঘনাদকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে ছুটে বেড়ালেও কোথাও একটি বেড জোগাড় করতে পারেননি। তাঁরা জানান প্রথমে তাঁরা তাঁকে নিয়ে বাঙ্গুর, তারপর এসএসকেএম, তারপর চিত্তরঞ্জন এবং ভোরবেলা এনআরএস-এ নিয়ে যান। কিন্তু বাঁচাতে পারলেন না মেঘনাদকে। পরিবারের লোকজনেরা হাসপাতালে গুরুত্বহীনতা এবং রোগীর বাড়ির লোকের সাথে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে। তাঁদের দাবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ভাবেই কোনো গুরুত্ব দেননি এই বিষয়টিকে।
এক একটি হাসপাতালে এক এক রকম আচরণের শিকার হন পরিবারের লোকেরা। কোথাও তাঁদের বলা হয় যে মেঘনাদের অস্ত্রপ্রচার করাতে হবে আবার কোথাও তাঁকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে এমনিই ফেলে রাখা হয়। অন্যদিকে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা এ ক্ষেত্রে বলেন যে, শুধুমাত্র হাসপাতালে ডাক্তারদের গাফিলতির জন্য ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একজন ইমার্জেন্সি রোগীকে কখনই রেফার করা যাবে না। তবে রোগীর বাড়ির লোকদের আগে জেনে নেওয়া দরকার যে, হাসপাতালে কতজন চিকিৎসক আছেন বা হাসপাতালে কটি বেড খালি আছে। তবে এই মৃত্যুর কারণ কী তা খতিয়ে দেখতে হবে।