বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: গতকাল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি এবং টট্যেনহ্যাম হটস্পার্স। কোপা দেল রে-তে নিজ নিজ ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার বড় ব্যবধানে জয়, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যান সিটির পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, সবই কাল উত্তেজনার নিরিখে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে দ্বিতীয় সারিতে চলে গেল একটি প্রীতি ম্যাচের কারণে।
গতকাল রিয়াদের কিং ফাহাদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে পিএসসি একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে মুখোমুখি হয়েছিল সৌদি আরবের দুই সেরা ক্লাব আল হিলাল ও আল নাসেরের সম্মিলিত একাদশের। প্রীতি ম্যাচ হলেও নিজেদের সর্বশক্তিশালী একাদশই মাঠে নামিয়ে ছিল পিএসজি। সম্মিলিত একাদশের নেতৃত্বে দায়িত্বে ছিলেন বিশ্বকাপের পর ইউরোপিয়ান ফুটবলের মায়া কাটিয়ে আল নাসেরে যোগ দেওয়া ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
ম্যাচের আগে থেকেই স্টেডিয়ামে তৈরি হয় নানা স্মরণীয় মুহূর্ত। বর্তমানে পিএসসিতে খেলতে থাকা নিজের দুই পুরনো সতীর্থ, গোলরক্ষক কেইলর নাবাস এবং তারকা ডিফেন্ডার সার্জিও র্যামোসের সাথে সাক্ষাৎ হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। দুজনকেই জড়িয়ে ধরেন সিআরসেভেন। এরপর ম্যাচের শুভ সূচনা করেন বলিউডের তারকা অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। তার সঙ্গে মেসি এবং রোনাল্ডোর সাক্ষাতের মুহূর্তটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ম্যাচে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে নেইমারের পাস থেকে গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দিয়েছিল মেসি। মহতারকা সমৃদ্ধ দলের সামনে সম্মিলিত একাদশকে বেশ কিছুটা অসহায়ই দেখাচ্ছিল। এরপর এমবাপ্পে, মেসিরা কিছু সুযোগ তৈরি করলেও নেইমার গোল করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু ম্যাচের ৩৪ মিনিটে উল্টোদিকে পেনাল্টি বক্সে কেইলর নাবাসের সঙ্গে মারাত্মক সংঘর্ষের পর পেনাল্টি আদায় করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এই পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফিরিয়ে আনেন তিনি।
এরপর পিএসজি আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এমবাপ্পের বিপজ্জনক ক্রস থেকে গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কুইনস। এরপর দলকে আরো এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু বক্সের ভেতর পেনাল্টি আদায় করলেও সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর প্রথমার্ধের একদম শেষ সময়ে বাঁ পা-এর ফিনিশে ফের সমতা ফেরান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপ্পের অসাধারণ লো ক্রস থেকে পিএসজিকে এগিয়ে দেন তারকা ডিফেন্ডার সার্জিও র্যামোস। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সম্মিলিত একাদশ সমতায় ফেরে। কিন্তু তারপর মেসির আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল করে আবার পিএসজি খেয়ে এগিয়ে দেন গত বিশ্বকাপ ফাইনালের ট্র্যাজিক নায়ক এমবাপ্পে। এরপর ম্যাচের এক ঘন্টা নাগাদ সমস্ত তারকা ফুটবলারকে তুলে নেওয়া হয়। দর্শকদের হাততালির মধ্যে মাঠ ছাড়েন রোনাল্ডো, মেসিরা। তারপর দুই দলই একটি একটি করে গোল করেছিল। ৫-৪ ফলে ম্যাচ জেতে পিএসজি। কিন্তু জোড়া গোল করার কারণে ম্যাচের ফেরার পুরস্কার পান রোনাল্ডোই। প্রীতি ম্যাচ হলেও কোনও দলই একে অপরকে এক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে দেয়নি।
গতকাল এমবাপ্পে দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও তুলনামূলকভাবে কিছুটা ফিকে দেখিয়েছে মেসি এবং নেইমারকে। রোনাল্ডো প্রমাণ করলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি, গত কয়েক মাসে যা হয়েছে সেটা শুধু তার জীবনের খারাপ সময়ের অংশ। দুটি গোল করা ছাড়াও মাঠের মধ্যে বেশ কিছু স্কিলের প্রদর্শন করেছেন সিআরসেভেন। এক সময় মেসিকে ট্যাকেল করে তার পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছেন। ভক্তরা আশা করছেন যে তিনি এশিয়ান ফুটবলেও সফলতা পাবেন।