বাংলা হান্ড ডেস্ক : চাঞ্চল্যকর খবর! হদিশ মিলেছে আইএস জঙ্গিদের একটি পেন ড্রাইভ। এবং সেই পেনড্রাইভে রয়েছে একাধিক দেশনেতার ছবি। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ধারণা, ওই শীর্ষনেতারাই ছিলেন আইএস (IS) জঙ্গিদের টার্গেট। এর জেরেই প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে কলকাতা-সহ দেশের একাধিক জায়গায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইএস-র ৩ অভিযুক্ত জঙ্গিকে হেফাজতে রেখে জেরা করছে কলকাতা পুলিসের (Kolkata Police) স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স।
এর আগে হাওড়া থেকে কলকাতায় বৈঠক করতে এসে এসটিএফের (STF) হাতে গ্রেফতার হয় মহম্মদ সাদ্দাম ও সায়েদ আহমেদ। তাদের বিরুদ্ধে কলকাতাকে কেন্দ্র করে আইএস কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ ওঠে। তাদের জেরা করেই মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) থেকে গ্রেফতার হয় মহম্মদ রাকিব কুরেশি নামে আইএস জঙ্গিদের মাথা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল, পেন ড্রাইভ ও ল্যাপটপ ঘেঁটে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর নথি পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তারই ভিত্তিতে পুলিস জানায় নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও নাশকতা চালানোরও ছক কষে তারা। এর পরই আইএস-এর মামলায় ইউএপিএ (UAPA) আইন লাগু করা হয়। তদন্তের স্বার্থে এদিন পুলিস হেফাজত থেকে আইএস-এর কুরেশিকে আবারও ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। তাকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবারও পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ওই দিন সাদ্দাম ও সায়েদের সঙ্গেই তাকে আদালতে তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের তিনজনকেই নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA)।
পুলিস সূত্রে খবর, তদন্ত চলাকালীন তাদের একটি পেন ড্রাইভে (Pen Drive) বেশ কয়েকটি ছবি গোয়েন্দাদের হাতে আসে। তাঁদের মধ্যে রয়েছে দেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতার ছবি। তাঁরা কোথায় থাকেন, তাঁরা কী ধরনের নিরাপত্তার আওতায় পড়েন, সেই সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করে রাখা হয়েছে পেন ড্রাইভে। সাদ্দাম পুলিসকে জানায়, মধ্যপ্রদেশের কুরেশি তাকে একটি স্বয়ংক্রিয় আধুনিক রাইফেল জোগান দেবে বলে কথা দেয়। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, এভাবে দেশের নেতাদের উপরও এবার ‘লোন উলফ অ্যাটাক’-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে আইএস। সেই কারণেই তারা নেতাদের ছবি ও বিবরণ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে রাখছিল পেন ড্রাইভে। কীভাবে তাঁদের উপর হামলা হতে পারে, সেই পরিকল্পনাই চলছিল তাদের।
লালবাজার জানায়, এই বছর সাধারণতন্ত্র দিবসে (Republic Day) রেড রোডের কুচকাওয়াজে প্রচুর দর্শক থাকবেন। নিরাপত্তার জন্য রেড রোড ও সংলগ্ন রাস্তাকে ১১টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। একেকটি জোন ভাগ করা হয়েছে একাধিক সেক্টরে। একেকটি জোনের দায়িত্বে থাকবেন একেকজন করে ডিসি। অন্তত ২০ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ আধিকারিকরা থাকবেন রেড রোডে। শুধু রেড রোডেই প্রায় দেড় হাজার পুলিশ থাকছে। কলকাতাজুড়ে থাকছে প্রায় চার হাজার অতিরিক্ত পুলিশ। রেড রোডে থাকছে পুলিশের বিশেষ কন্ট্রোল পোস্ট।
নজরদারি চালানো হবে ড্রোনের (Drone) মাধ্যমে। দর্শকদের উপর কড়া নজর রাখবে সাদা পোশাকের পুলিস। নিরাপত্তার জন্য রেড রোডের আশপাশে থাকছে বালির বস্তা দিয়ে তৈরি অন্তত পাঁচটি বাঙ্কার। নজরদারির জন্য প্রায় ৬টি ওয়াচ টাওয়ার, নিরাপত্তার জন্য তিনটি কুইক রেসপন্স টিমও থাকছে। শহরে ২৬টি বিশেষ টহলদার গাড়ি, বারোটি হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, টহল দেবে পুলিসের বাইক টিম।